‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবারও (২৭ মে) সচিবালয়ে বিক্ষোভ করবেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সোমবার (২৬ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠনের সমন্বয়ে গঠন করা ঐক্য ফোরামের নেতারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
একই সঙ্গে সচিবালয়ের বাইরে অন্যান্য সরকারি দপ্তরে এমন কর্মসূচি পালন করার জন্য আহ্বান জানান তারা।
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো.বাদিউল কবীর বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয় চত্বরের বাদামতলায় সমবেত হবেন।’
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর শনিবার (২৪ মে) থেকেই সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর রোববার (২৫ মে) সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। অধ্যাদেশটিকে ‘কালা কানুন’ বা ‘নিবর্তনমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই রোববার অধ্যাদেশটি জারি করেন রাষ্ট্রপতি।
সোমবার তৃতীয় দিনের মতো সকাল থেকেই সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে নামেন কর্মচারীরা। কর্মচারীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়। তারা কিছু সময়ের জন্য সচিবালয়ের প্রধান ফটক বন্ধও করে দেন।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়।
এরপর সোয়া ১১টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের অপর অংশ। এই অংশে নেতৃত্বে ছিলেন মো. নূরুল ইসলাম এবং মুজাহিদুল ইসলাম। এরপর আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনও যোগ দেয়।
বিক্ষোভ মিছিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘অবৈধ কালো আইন, বাতিল করো করতে হবে’, ‘কর্মচারী মানে না, অবৈধ কালো আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কালো আইন’, ‘এক হও লড়াই করো, ১৮ লাখ কর্মচারী’, ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও এক হও’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’- এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভ মিছিলটি সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
টিএইচ