যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্টলেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন টাইম ম্যাগাজিনে লিখিত এক মুখবন্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করেছেন। তিনি ইউনূসকে “বাংলাদেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে বের করে আনার” পথপ্রদর্শক হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
হিলারি ক্লিনটন তার লেখায় উল্লেখ করেন, ‘গত বছর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রীর পতনের পর জাতিকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একজন সুপরিচিত নেতা এগিয়ে আসেন—তিনি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।’
হিলারি আরও বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়নে ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোগ কেবল অর্থনৈতিক পরিবর্তন নয়, সামাজিক মর্যাদার ক্ষেত্রেও এক বৈপ্লবিক প্রভাব ফেলেছে। তার গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ফলে লক্ষাধিক নারী নিজেদের ভাগ্য বদলাতে সক্ষম হয়েছেন।’
নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি লেখেন, ‘আমার সঙ্গে ইউনূসের প্রথম দেখা হয় আরকানসাসে, যখন তিনি গভর্নর বিল ক্লিনটন ও আমাকে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষুদ্রঋণের মডেল চালু করতে সহায়তা করেন। এরপর আমি পৃথিবীর বহু প্রান্তে তার কাজের ছাপ দেখেছি—সেখানে মানুষ নতুনভাবে বাঁচতে শিখেছে, আশার আলো ফিরে পেয়েছে।’
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পরদিন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সংসদ বিলুপ্ত করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ৮ আগস্ট তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
হিলারি ক্লিনটন ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার পুনরুদ্ধার করছেন, জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনছেন এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও মুক্ত সমাজের ভিত্তি গড়ে তুলছেন।’
২০২৪ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ মুসলিম’ তালিকায় স্থান পান। একই বছর টাইম ম্যাগাজিনের ‘বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তি’র তালিকাতেও তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।
টিএইচ