জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বরাবর দাখিল করা হবে।
শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার দাখিলের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর “ফরমাল চার্জ” দাখিলের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।’
তাজুল ইসলাম আরও জানান, একই মামলার অংশ হিসেবে চানখারপুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত কয়েকজন সাবেক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও তদন্ত শেষ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হবে চলতি সপ্তাহেই। এর মাধ্যমেই ‘জুলাই গণহত্যা’র বিচারিক অধ্যায় শুরু হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল। তিন সদস্যবিশিষ্ট ট্রাইব্যুনাল—যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার—প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে এই সময়সীমা নির্ধারণ করে দেন।
২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন সরকারের ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর অনুমোদন দেয় ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগপত্রে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ‘নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলির নির্দেশ ও হত্যাযজ্ঞে’ জড়িত ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই ঘটনায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
চলমান তদন্ত ও মামলাগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, ছাত্র আন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস পূর্বঘোষিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন।
টিএইচ