মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post

দুর্গাপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহত

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি

দুর্গাপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহত

রাজশাহীর দুর্গাপুরে বরেন্দ্রের ডিপ টিউবওয়েল নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় হাসিবুর রহমান নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের হোজা অনন্তকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই যুবক আবুল কাশেমের ছেলে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্যদের টহল অব্যাহত রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হোজা অনন্তকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামের ডিপ টিউবওয়েল নিয়ে এখানকার বিএনপির দুই গ্রুপ রেজাউক হক ও আবুল কাশেম পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত রমজান মাসে আবুল কাশেমের ছেলে নিহত হাসিবুর রহমান একটি ডিপ টিউবওয়েলে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ দরবার হয়েছে। তারপরও দুই পক্ষের প্রচণ্ড রেষারেষি চলে আসছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার নিহত হাসিবুর তার ফুফাতো ভাই শফিকুল ইসলামের জমি মাপার সময় তিনি মাপের ফিতা টানছিলেন। এ সময় হাসিবুরের সঙ্গে মাপা নিয়ে অপর পক্ষ বিএনপি নেতা ওয়াজেদ আলীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়।

পরদিন গত বুধবার এসব ঘটনার রেষ ধরে প্রতিপক্ষ শাহিন ইসলামের সঙ্গে আবারও বিবাদে জড়িয়ে পড়েন হাসিবুরের পক্ষ। ওদিন সন্ধ্যায় হাসিবুর বাড়ি থেকে বের হলে প্রতিপক্ষের লোকেরা রামদা দিয়ে কোপালে হাসিবুরের হাত ও শরীরে বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি সেখানে মারা যান।

এ ঘটনায়  উভয়পক্ষের অনন্ত ১০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে আব্দুর রহিম, ফারুক হোসেন নামের দুজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আহত অন্যরা হলেন, আব্দুল হান্নান, ওয়াজেদ আলী, সুনু, রাহিম, দুলু। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত হাসিবুরের বোন কুলসুমা খাতুন বলেন, আমাদের চোখের সামনে আমার ভাইকে তারা রামদা দিয়ে কোপালো আমরা কিছুই করতে পারলাম না।

এ ঘটনা জানতে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রেজাউলের দোকান ঘরের সামনের অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। আত্মীয় স্বজনরা হকের বাড়ি থেকে একটি গরু গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া শাহিনের তালাবদ্ধ বাড়ির মেন গেটে ভাঙা চুরা দেখা গেছে। তবে অভিযুক্তদের বাড়িতে কেউ না থাকায় তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দুর্গাপুর থানার ওসি দুরুল হোদা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। পুলিশসহ সেনাসদস্যেরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ওসি বলেন, দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরধরে সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রন্তুতি চলছে।

টিএইচ