মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post

পেকুয়ায় সড়ক যেন মরণফাঁদ

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

পেকুয়ায় সড়ক যেন মরণফাঁদ

কক্সবাজারের পেকুয়ায় ২০ বছর ধরে যানবাহন চলাচল নেই সবুজ বাজার-রব্বত আলী পাড়া সড়কে। বর্তমানে সড়কটি যেন মরণফাঁদ। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা এখন পায়ে হেঁটে যাওয়া-আসাও অনেকটা কষ্টদায়ক। রাজাখালী ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো অন্যতম যাতায়াত মাধ্যম রব্বত আলী পাড়া সড়কের চিত্র বেহাল দশায়। 

প্রায় ২৫ বছর পূর্বে গ্রামীণ এ সড়কের সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর ও উন্নতি করতে সে সময় সড়কের পাকাকরণ হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এ সড়কে ইট বিছিয়ে সড়ক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে। তবে ওই সময় থেকে গ্রামীণ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে আর কোনো উন্নয়ন কিংবা পুনঃসংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হয়নি।

সবুজ বাজার পূর্ব দিকে সড়কটি প্রায় দুই কিলোমিটার বিস্তৃত। সবুজ বাজার থেকে রব্বত আলী পাড়া হয়ে সড়কটি পূর্বদিকে পাউবোর বেড়িবাঁধে গিয়ে মিশেছে। লালজান পাড়ার ব্রিজ থেকে পশ্চিম দিকের সবুজ বাজারসহ রাজাখালী ইউনিয়নের মূল কাঠামোর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এটি অন্যতম যাতায়াত মাধ্যম। তবে কালের পরিক্রমায় এটি এখন সড়ক নয় যেন মৃত্যুফাঁদ। এক সময় গাড়ি চলাচলের জন্য উপযোগী ছিল। এখন অধিকাংশ স্থানে সড়কটি খানাখন্দকে ভরপুর। দুই কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত এক কিলোমিটার ইট নেই। ওই অংশে পরিণত হয়েছে কাঁচা সড়কে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে গিয়ে দেখা গেছে সড়কটির বেহাল চিত্র। সুবজ বাজার থেকে রব্বত আলী পাড়া হয়ে সড়কটি জর্জরিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বেশিরভাগ স্থানে ইট উঠে গেছে। রব্বত আলী পাড়ার পূর্ব অংশে বেড়িবাঁধ থেকে হাজি আহমদুর রহমানের বাড়ি পর্যন্ত সড়কের ইট নেই। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী সেকান্দর আলীর বাড়ি হয়ে রব্বত আলী পাড়ায় রাজাখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন সিকদারের বাড়ির সামনে হয়ে সবুজ বাজার পর্যন্ত সড়কের ইট উঠে গেছে। মাওলানা মনজুর আলমের বাড়ির সামনের সড়কটির নাজুক অবস্থা। ফজল কাদেরের বাড়ি থেকে রিয়াজ খান রাজুর বাড়ি পর্যন্ত লবণ মাঠ অংশে ভাঙাচোরা কিছু ইট আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা মনজুর আলম, মোয়াজ্জেম হোসেন সিকদার, লালজান পাড়ার গোলাম রহমান পুতু বলেন, বিগত ২৫ বছর আগে এ রাস্তায় ইট বিছানো হয়েছিল। সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত আর কোন ধরণের সড়কের কাজ হয়নি। পানি উৎস ও নিষ্কাশন জন্য ভেতরে একটি খাল আছে। জোয়ার ভাটার পানির প্রবাহ মাঝে মধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বর্ষার সময় পানির স্রোত রাস্তার সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পূর্ব অংশের লালজান পাড়া, রায়বাপের পাড়া, রব্বত আলী পাড়া, টেকঘোনা, মাঝির পাড়া, পশ্চিম অংশের মৌলভী পাড়া, চড়িপাড়া, বদিউদ্দিন পাড়া, বকশিয়াঘোনা, সুন্দরী পাড়াসহ রাজাখালী ইউনিয়নের বিপুল মানুষ এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম রহমান বলেন, সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবুজ বাজার রাজাখালীর বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এয়ার আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়, এয়ার আলী খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, সবুজ বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সড়কটি একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। এছাড়া সবুজ বাজারের সঙ্গে টইটং ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করতে এ সড়কের বিকল্প নেই। আমার ওয়ার্ডবাসীসহ ইউনিয়নের বিপুল জনগোষ্ঠী সড়কটির কারণে উন্নয়ন বৈষম্যের মধ্যে আছে। আমরা সড়কের দ্রুত সংস্কার চাই।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পেকুয়ার প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ বলেন, আসলে যেসব সড়কগুলো উন্নয়নবঞ্চিত রয়েছে সেসবের বিষয়ে স্ব স্ব জনপ্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তারা বরাদ্দের জন্য কাগজপত্র চূড়ান্ত করে দেন। এ সড়কটির ব্যাপারে লিখিত আবেদন জানালে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ বরাদ্দের জন্য অবহিত করব।

টিএইচ