শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫
ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Post

বিসিসি’র সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত

বরিশাল ব্যুরো  

বিসিসি’র সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত

ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সাবেক মেয়র ও বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ ১৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগত নথিপত্র ও কর্পোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ইতোমধ্যে নোটিশ জারি করেছে দুদক।

বৃহস্পতিবার দুদকের বরিশাল কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

তালিকাভুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—প্রশাসনিক কর্মকর্তা লকিতুল্লাহ, সাবেক সচিব মাছুমা আক্তার, উচ্ছেদ শাখার প্রধান স্বপন কুমার দাস, সার্ভেয়ার তাপস, নাছির, মশিউর, আর্কিটেক্ট সাইদুর, জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল, সম্পত্তি শাখার ফিরোজ ও মাহবুবুর রহমান শাকিল, প্ল্যান শাখার লোকমান ও কালটু, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মশিউর রহমান, বাজার সুপারিনটেনডেন্ট নুরুল ইসলাম, ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট আজিজুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এইচ.এম কামাল ও সাইফুল ইসলাম মুরাদ এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির।

দুদকের পাঠানো নোটিশে উল্লেখিতদের নাম, পদবি, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ সংক্রান্ত রেকর্ড, সম্পত্তি ও অর্থ বরাদ্দের তথ্য, দীঘির মালিকানা, বালু ভরাট, ঈদ উপলক্ষে ব্যানার তৈরির জন্য ১৩ লাখ টাকার হিসাব, খোকন সেরনিয়াবাতের ফেসবুক পেজ বুস্টিংয়ে বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, ল্যাপটপ, ড্রোন, ফার্নিচার, মনিটরসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।

দুদক সূত্র জানায়, কিছু নথি ইতোমধ্যে জমা পড়েছে, তবে অধিকাংশ এখনও মেলেনি। সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণের জন্য পৃথকভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কাইয়ুম হাওলাদারের স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

এ বিষয়ে দুদকের পরিচালক মোজাহার আলী সরদার বলেন, “সাবেক সিটি মেয়রসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ চলছে, তাই বিস্তারিত মন্তব্য করা যাচ্ছে না।”

দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের যৌথ কারসাজিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়। ঘুষ, অনিয়ম ও সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষভাবে আলোচিত অভিযুক্ত স্বপন কুমার দাস, যিনি প্রকৃতপক্ষে পরিসংখ্যানবিদ এবং সাবেক মেয়রের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, তিনি উচ্ছেদ শাখার প্রধান হিসেবে দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বরিশালে সংঘর্ষ মামলার আসামিও তিনি।

এ বিষয়ে স্বপন কুমার দাস বলেন, “সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল জানান, “আমি ব্যক্তিগতভাবে দুদকের একটি চিঠি পেয়েছি এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেব। তবে অন্যদের বিষয়ে আমার জানা নেই।”

টিএইচ