বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Post

ভেড়ামারায় কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

ভেড়ামারায় কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বিএনপির সার্চ কমিটির বৈঠককে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গোহাট সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৮ রাউন্ড গুলি, দুটি বাড়ি ও একটি মুদির দোকানে হামলা-ভাঙচুর এবং লুটের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

গত মঙ্গলবার উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের গোঘাট সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতির অবনতি হলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। রাত প্রায় ১২টার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের তিনজন আহত অবস্থায় ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। এক্ষেত্রে ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির দুই গ্রুপ একে অপরকে দোষারোপ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির সমন্বয়ে ওয়ার্ড কমিটির ভোটার লিস্ট গঠনের প্রস্তুতি চলছিল। এই বৈঠক রাত পর্যন্ত চলে। বৈঠক শেষ হলে নেতাকর্মীরা যে যার মতো চলে যায়। ঠিক এমন সময় গোলাগুলির শব্দ চারদিকে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বিএনপির দুটি গ্রুপ দুদিকে অবস্থান নেয়।

পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় সংঘর্ষে একপক্ষের বিএনপি কর্মী হামিদুল ও আরিফ আহত হন। অপর পক্ষের বিএনপি কর্মী টিপু মেকারকে আহত অবস্থায় অন্যপক্ষকে দোকানে শাটার বন্দি অবস্থায় রাখে। পরবর্তীতে তাদের ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, সার্চ কমিটির সদস্য শামসুলের নির্দেশে রাজন, স্বপন, কিবরিয়া, লিমন, টিপু আমাদের কর্মীদের ওপর গুলি করে। এই সময় আমাদের দুই কর্মী আরিফের মাথায় ও হামিদুলের ডান হাতের কনুইতে গুলি লেগে আহত হয়। তাদের বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রবিউল সরকার বলেন, ধরমপুর ইউনিয়নের সার্চ কমিটির সদস্য শামসুল খুবই বেপরোয়া আচরণ করেন।

তিনি তার ছেলেসহ অন্যদের দিয়ে আক্রমণ চালিয়েছেন। ছাত্রদল নেতা আকাশের বাড়িতে হামলার ঘটনা তিনি নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমরা কোনোভাবেই এ হামলার সঙ্গে জড়িত না।

অপরদিকে ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির সদস্য শামসুল জানান, আমি ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হওয়ার কারণেই মূলত আজকের এই নাটক শুরু করেছে। সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে আজকের এ ঘটনা হয়েছে। মিটিং শেষে আসাদুজ্জামান মিঠু আমাকে গাড়িতে তুলে দিয়েছে। আমি চলে আসার পরেই মূলত এ ঘটনা ঘটেছে। এখানে কোনো মতেই আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ড. পল্লব জানান, দুজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। একজন মাথায় আঘাত পেয়েছে সেটা গুলির কোনো আঘাত নয়। অপরজন হাতের কনুইতে আঘাত পেয়েছে। সেটা গুলির আঘাত কিনা স্যারদের সঙ্গে পরামর্শ করে বলতে পারব।

ভেড়ামারা থানার ওসি (চলতি দায়িত্ব) রাকিবুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী এসেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সাহায্য করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ বিষয়ে থানায় এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে পুলিশ তৎপর আছে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য।

টিএইচ