মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post

মিঠাপুকুরে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি 

মিঠাপুকুরে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ

রংপুরের মিঠাপুকুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে নিম্নমানের কাজের অভিযোগে কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ রেখেছেন। এনিয়ে সেখানে ৩য় বারের মত নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠলো। ঠিকাদারের কাজ ও আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। তারা দ্রুত প্রতিকারের দাবি করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র, অভিযোগ এবং সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার ১৩নং গোপালপুর ইউনিয়নের গোকর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি ১৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪০ টাকা ব্যয় বরাদ্দে নভেম্বর/২২ মাসে কাজ শুরু করেন মেসার্স মনা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। 

কাজের শুরুতেই গ্রেট বীম নির্মাণে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে ওই নিম্নমানের কাজ বন্ধ রাখেন। পরে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর তত্বাবধানে বিধি মোতাবেক কাজ শুরু হয়। এরপর অভিযোগ উঠে ময়লাযুক্ত নিম্নমানের খোয়া ও অপরিমিত পানির ব্যবহার নিয়ে। 

কর্তৃপক্ষ সেটিও দৃষ্টিতে নিয়ে উতরে যান। ৩য় দফায় এবারে এলাকাবাসী অভিযোগ তুলেছেন ভবনের ওয়াল নির্মাণে ২ ও ৩নং ইট ব্যবহারের। বালু সিমেন্ট মিশ্রণে নেয়া হয় আদি পদ্ধতি (কোদাল বেলচা ব্যবহার করা হয়)।

সরেজমিনে গিয়ে নির্মিত ভবনের সামনে লক্ষ্য করা গেছে ২ ও ৩নং ইট মিশ্রিত খামাল। নিয়ম থাকলেও প্রকল্পের সামনে বা আশে-পাশে খুঁজে পাওয়া যায়নি প্রকল্পের চলমান কাজের দৃশ্যমান সাইনবোর্ড। দেখা মেলেনি ঠিকাদারের। রতন নামের মিস্ত্রি বলেন, ঠিকাদার আসেন না। মোবাইলে তার সাথে কথা হয়। তিনিই ৩/৪ জন মিস্ত্রি নিয়ে কাজ করেন। মাঝে-মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার স্যারেরা এসে কাজ দেখে যান। 

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, ঠিকাদার শুরু থেকে কাজে ভেজাল করছেন। অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না। ঠিকাদার কেন কোন কিছু তোয়াক্কা করছেন না, এটা তাদের বুঝে আসে না। 

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, ভবন নির্মাণ কাজের ব্যাপারে তার কোন করণীয় নেই। কাজ তদারকি করেন ইঞ্জিনিয়ার। তবে শুরু থেকে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠছে। কর্তৃপক্ষ বারবার পদক্ষেপ নিয়েও কিছু করতে পারছেন না। ঠিকাদার এবং তার লোকজনকে কিছু বললেই কাজ বন্ধ রেখে চলে যাওয়ার হুমকি দেন। কিছুদিন আগে তারা তা করেছিল।  আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবোনা। 

মোবাইল ফোনে ঠিকাদার নজরুল ইসলাম নজেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ১নং ইট কিনেছেন। কোন ২ ও ৩নং ইট ব্যবহার করা হচ্ছে না। ঠিকমত কাজ করছেন। মাঝে মাঝে সাইটে আসেন। আসলে সাক্ষাতে কথা বলবেন। 

কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মি. ইব্রাহিম বলেন, ২নং ইটের অভিযোগ পাওয়ায় ওই ইটের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি এবং তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মিলে কাজ তদারকি করেন বলে তড়িঘড়ি মোবাইল ফোন কেটে দেন। 

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রুহুল আমিন বলেন, ইতোপুর্বে নিম্নমানের কাজের অভিযোগে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আবারো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টিএইচ