শুক্রবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

উপকূলে গরম ও সুপেয় পানির সংকটে জনদুর্ভোগ

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

উপকূলে গরম ও সুপেয় পানির সংকটে জনদুর্ভোগ

তীব্র গরমে, সুপেয় পানির সংকট চরমে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপকূলে লবণক্ততা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলের সবচেয়ে বড় সংকট হলো খাওয়ার পানি। চারদিকে প্রচুর পরিমাণের পানি থাকলেও লবণক্ততা থাকার কারণে পান করা যায় না। 

সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন হলেও উপকূলে এখনো পানির চাহিদা মেটাতে নারীরা কয়েক কিলোমিটার দূরে কলস কাঁধে নিয়ে হেঁটে পানি আনতে যায়। পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। 

তারপরে মেলে এক কলস পানি। তাতে সময়ের অপচয়ে সংসারের মধ্যে কলহ তৈরি হয়ে থাকে। এমনকি পানি আনতে যেয়ে অনেক সময় দেরি হওয়ার কারণে অনেক পরিবারের ছোট শিশুরা পানিতে ডুবে মারাও যায়। উপজেলা জনস্বাস্থ্যের তথ্যমতে পানির সংকট নিরসনে ৩০টা পুকুর খনন করা হয়েছে এবং পুকুরগুলোতে পিএসএপ বসানো হয়েছে। 

৪ হাজারের মতো পানির ট্যাং দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া নলকূপের ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে শ্যামনগর উপজেলায় জনসংখ্যার তুলনায় এ ব্যবস্থা খুবিই সীমিত বলে জানান এ কর্মকর্তা। এ অঞ্চলে পানির সমস্যা সমাধান করতে হলে এর ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়াতে হবে। 

তীব্র গরমে শ্যামনগরে উপকূল এলাকায় কৈখালী, রমজানগর, মুন্সীগঞ্জ, বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, পদ্মপুকুর, আটুলিয়ায় সুপেয় পানির সংকট চরমে। এ অঞ্চলের মানুষ তাদের পুকুরের পানি পান করে থাকে। তাপদাহে পুকুর পানি পানে অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। 

ঘুরে দেখাগেছে, কৈখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গোলামের দীঘি এলাকায় পানি সংগ্রেহের বড় একটি বড় লাইন দেখা যায়। পানি আনতে আসা আমিরুন বিবি (৪০) জানান, দেড় কিলোমিটার দূর থেকে পানি আনতে এসে ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। এখনো পানি নিতে পারনি। 

সবিলা খাতুন বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে একটি খাওয়ার পানির পুকুর ছিল সেই পানি খেতাম। কিন্তু রোদে ও গরমে পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। তাই কষ্ট করে এত দূরে পানি আনতে আসলাম। দাতিনাখালী গ্রামের শিফালী খাতুন বলেন, পানির অভাবের কারণে নোকা নিয়ে অনেক দূরের পানি আনতে যেতে হয়। যে কারণে বাড়িতে স্বামী স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয়। মায়েরা বাড়িতে রেখে অনেক দূরে খাওয়ার পানি আনতে যাওয়ার কারণে  এই গ্রামে তিনজন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে।

গাবুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম বলেন, গাবুরারয় ১৫টি গ্রামের মধ্যে ৪টি গ্রামে খাওয়ার পানি আছে। বাকি গ্রামের মানুষগুলো কষ্ট করে ওইসব গ্রাম থেকে পানি নিতে আসে। পাইপ লাইনের মাধ্যমে যদি সাপলাই দেয়া হতো তাহলে পানির কষ্ট থেকে কিছুটা হলেও গাবুরার মানুষ বাঁচত।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন বলেন, সুপেয় পানির সংকট সমাধানের জন্য আমরা পুকুর ও খাল খনন শুরু করেছি। এ ছাড়া কয়েকটা বে-সরকারি সংস্থা আরও প্লান্ট চালু করেছে। এবং সরকারিভাবে পানির ট্যাংক বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

টিএইচ