কুড়িগ্রামে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে জেলা ও উপজেলাগুলোতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে গবাদি পশুর হাট। গরু, মহিষ, ছাগল বেচাকেনার ধুম পড়েছে হাটগুলোতে। গত কয়েক বছর ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশে খামারিরা গরুর ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হলেও এবছর অনেকটা আশার আলো ফিরে পেয়েছে গরুর খামারিরা।
দিন যতই বাড়ছে গরুর দাম ও চাহিদা বেড়ে চলছে। ফলে গরু বিক্রেতারা ভালো লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন যাত্রাপুর হাট ইজারাদার প্রতিনিধি ও ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তর বঙ্গের ঐতিহ্যবাহী গরুর হাট যাত্রাপুর। সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার দুই দিন বসে এ গরুর হাট। নদী বৈধতা ও চরাঞ্চলের পাশে এ হাট হওয়ায় দেশি গরুর সমাগম বেশি। এছাড়া এ হাটে প্রাকৃতিকভঅবে খাবার খেয়ে পালন করা দেশি গরু ছাগল এবং খামারিদের পালন করা ফ্রিজিয়ান, অস্ট্রেলিয়ান গরুও বিক্রি হয়। এ হাটে গরু আমদানি-রপ্তানিও বেশ ভালো হয়। হাটগুলোতে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য পুলিশ প্রশাসন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় তদারকি করছে।
কুড়িগ্রাম সদর থেকে গরু কিনতে এসেছেন মিজানুর রহমান মিন্টু। তিনি বলেন, গরু কিনতে এসেছি। কয়েকটা গরু দেখাদেখি করলাম। তবে দামটা মোটামুটি ভালো। আশা করছি সাধ্যের মধ্যে গরু কিনতে পারবো। গরু বিক্রেতা মো. আয়নাল হোসেন জানান, যাত্রাপুর হাটে আমি প্রায় ৪ মণ ওজনের দেশি গরু এনেছি। দাম চাচ্ছি ১ লাখ টাকা। ক্রেতারা এখন পর্যন্ত ৮০ আশি হাজার দাম বলেছে। হাটে ক্রেতার সমাগম ভালো আশা করছি লাভজনক দামে গরুটি বিক্রি করতে পারবো।
গরুর পাইকার মো. আলম সর্দার বলেন, আমি এ পর্যন্ত ৮টি গরু কিনেছি। এগুলো বয়স রং ভেদে ৭০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা। আশা করছি ব্যবসায় লাভ হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রহিম উদ্দিন হায়দার রিপন বলেন, হাটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই।পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনী সব সময় তদারকি করছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান- এবছর জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ২৯টি পশু হাট রয়েছে। এবার জেলায় কেরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার ৪৮৬টি প্রস্তুত আছে। চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৮০টি। উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ৫৭ হাজার ৬৪৬টি অন্য জেলায় প্রেরণ করা যাবে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে জেলার ৯ উপজেলায় ভেটেরিনারি টিম গঠন করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্থায়ী ও অস্থায়ী ভাবে গরুর হাট বসেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা জাল নোট শনাক্ত, চুরি কিংবা অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কোন ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
টিএইচ