মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post

দোয়ারাবাজারে ব্রিজ না থাকায় বিপাকে ১০ গ্রামের মানুষ

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

দোয়ারাবাজারে ব্রিজ না থাকায় বিপাকে ১০ গ্রামের মানুষ

ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থীসহ ১০ গ্রামের মানুষ এখন বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন। বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা। অপেক্ষায় কেটেছে ৫২ বছর! কত সরকার এলোগেলো কেউ কথা রাখেনি। ব্রিজ না হওয়ার কষ্টে রয়েছেন ১০ গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ। দুর্ভোগ সয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন তারা।

এখানে ব্রিজ না থাকায় এলাকার রাস্তাসহ অন্য কোনো উন্নয়নও হয়নি। এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেছেন, ৮০ বছরের বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান। তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা। খাশিয়ামারা নদীর উপশাখার সাঁকোর পাড়েই তার বাড়ি। আর এ সাঁকো পার হয়ে যেতে হয় জেলা সদর ও স্থানীয় বাজারে।

সোমবার (২৯ মে) সরেজমিন দেখা যায়, খাশিয়ামারা নদীর একটি উপশাখা, শিমুলতলা গ্রাম ও সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজের মধ্যবর্তী খালের উপরে দেয়া হয়েছে বিশাল একটি বাঁশের সাঁকো। আর এ সাঁকো পার হয়ে স্কুল-কলেজে যাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। সাঁকোর পশ্চিম পাড়ে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। টিলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজ। শিক্ষার্থীসহ আর ১০টি গ্রামের মানুষ সাঁকো পারপার হয়ে এপার-ওপারে যাচ্ছে।

অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে প্রতিদিন। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে, সববয়সী মানুষ। সাঁকো পারাপারে ঝুঁকি থাকায় স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ-গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় সবাইকে। গর্ভবতী মায়েদের জরুরি হাসপাতালে নেয়ার জন্য দীর্ঘপথ ঘুরে সড়কে উঠতে হয়। নিরুপায় হয়ে মানুষ প্রতিনিয়ত পার হচ্ছেন এই বাঁশের সাঁকো।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাঁশের সাঁকোর স্থলে একটি ব্রিজের দাবি জানিয়ে আসছে ১০ গ্রামের লোকজন। শুধু আশ্বাসেই আটকে আছে ব্রিজ। সবাই বলে ব্রিজ হবে, কিন্তু হচ্ছে না। আশ্বাস পেতে-পেতে মানুষ এখন বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। অনেকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেও ব্রিজ হচ্ছে না। বর্ষায় ভারি বর্ষণে বাঁশের সাঁকো পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রতি বছর এলাকাবাসীর চাঁদায় ও বাঁশ সংগ্রহ করে দেয়া হয় বাঁশের সাঁকো।
 
টিলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, এই বাঁশের সাকো পারাবার হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসে।সাঁকো পারাপারে ছোটখাটো দুর্ঘটনা সব সময়ই ঘটিতেছে। বিশেষত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য এই বাঁশের সাঁকো অনেক বড় ঝুঁকি। সর্বক্ষণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি। কখন দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের দাবি এখানে সাঁকো স্থলে একটি ব্রিজ হোক।

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশীদ বলেন, গত কয়েকদিন আগে একটি উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভায় এ ব্রিজের কথা আলোচনা হয়েছে। এখানে ব্রিজ হওয়ার জন্য ছাতক-দোয়ারাবাজারের এমপি খুবই আন্তরিক। সব মিলিয়ে আমরাও চেষ্টা করছি অতিদ্রুতই সাঁকো স্থলে একটি ব্রিজ নির্মাণের।

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, শিমুলতলা গ্রাম ও সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজের মধ্যবর্তী খালের উপর সেতুর কথা আজ প্রথম শুনলাম, সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মানছুরুল হকের মোবাইল ফোনে বারবার কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

টিএইচ