মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post

বাহুবলে কাগজ কলমে ইউপি থাকলেও বাস্তবে নেই, জনভোগান্তি চরমে

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

বাহুবলে কাগজ কলমে ইউপি থাকলেও বাস্তবে নেই, জনভোগান্তি চরমে

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ৩নং সাতকাপন ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে জরাজীর্ণ একটি ভবনে, ছাদ থেকে খোয়া খসে পরে আহত হচ্ছে সেবাগ্রহীতা, সেবাদানকারীরা।

কোথাও ভবনের প্রাচীর ভেঙ্গে বের হয়ে এসেছে ভেতরের রড, এ রকম নানা সমস্যা নিয়েই ছোট একটি ভবনে ৫২ বছর ধরে চলছে অস্থায়ী কৃষি গোডাউনে ইউনিয়ন পরিষদের কাজ করে যাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা।

সেবা শুরু হয়, ১৯৬৭ইং থেকে, সেই থেকে আজ ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও হয়নি স্থায়ী ইউনিয়ন কার্যালয়। বিপাকে পরেছেন পরিষদের ৪৫ হাজার মানুষ। ছোট একটি জরাজীর্ণ অস্থায়ী ভবনে পাচ্ছে না নাগরিক সেবা ইউনিয়নবাসী।

এই জরাজীর্ণ অস্থায়ী ভবনে চেয়ারম্যান মেম্বার কিছু সময়ের জন্য আসলেও ছাদ থেকে খোয়া খসে পড়ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই ইউনিয়নে ৫২ বছর ধরে  ৪৫ হাজার সাধারণ মানুষ। ছোট এই জরাজীর্ণ ভবনটি উপজেলা কৃষি অফিসের পরিত্যক্ত কৃষি গোডাউন, দেখলে মনে হয় এখনই ভেঙে পড়বে।

ইউনিয়ন পরিষদ না হওয়ায় একদিকে নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ, আর অন্য দিকে চেয়ারম্যান মেম্বাররাও সেবা দিতে চাইলেও বসার জায়গা না থাকায় পারছেন না। সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে। এই অস্থায়ী কার্যালয়ে পরিষদের কার্যক্রম চলছে কোনো মতে। ইউনিয়নে জরুরি কাজ পত্র রক্ষণাবেক্ষণে ও বেগ পোহাতে হচ্ছে। নেই কোন চৌগাছার, পানির টিউবওয়েল এমনকি নলকূপ জরুরি কাজ ও পানির পিপাসা হলে এদিক সেদিক যেতে হয়।

বিভিন্ন জরুরি দরকারি কাজের জন্য ইউনিয়নের জনসাধারণ মানুষ  ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের স্বাক্ষর বা অন্য কোন কাজে গেলে চরম ভোগান্তি পেতে হয় ইউনিয়নবাসী। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অত্যাধুনিক ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে, কিন্তু বাহুবল ৩নং সাত কাপন ইউনিয়ন পরিষদ কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই। এতে ইউনিয়ন বাসীর কাছে একটি দুঃখজনক বলে ইউনিয়নের লোকজন জানিয়েছেন।

বর্তমানে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, ১৯৭৭ইং সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণের জন্য নিজ অর্থায়নে  মাওলানা আব্দুল হামিদ, তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর হামিদনগর এলাকায়  ২৫ শতক একটি ভূমি ইউনিয়ন পরিষদের নামে খরিদ করে দেন। যাতে ইউনিয়নবাসী জনভোগান্তির শিকার না হন। ইউনিয়নের পক্ষে জেলা প্রশাসকের নামে ভূমি রেজিস্ট্রারি কবলা করা হয়।

খরিদকৃত ভূমিতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণ করে নাগরিকের নাগরিক সেবার কার্যক্রম করবেন, এমনটাই আশা ছিল চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদের, ওই ইউনিয়ন ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। হামিদ নগর ইউনিয়নের শেষ ভাগে একটি ওয়ার্ডে, এতে ৪ জন ইউনিয়ন সদস্য তাদের দাবি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি ৯টি ওয়ার্ডের একটি মধ্যে স্থানে নির্মাণের দাবি জানান। এনিয়ে পরবর্তীতে স্থান নির্ধারণ নিয়ে আদালত গড়ায়।

এ জটিলতায় ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি থাকা স্বত্বেও আইনের জটিলতায় আটকা আছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণের কাজ।  বাহুবল ইউএনও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, এটি দীর্ঘদিনের সমস্যা, সাতকাপন ইউনিয়ন পরিষদ না থাকায় জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে, জনসেবা দিতে ও নিতে। আমরা প্রশাসনিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হওয়ার আশাবাদী।

বর্তমান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রেজ্জাক বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টা করে যাচ্ছি, এখন প্রশাসন ও ইউনিয়নবাসী আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, হয়ত সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের বিষয়টির প্রতি একটু সদয় দৃষ্টি দিবেন।

টিএইচ