শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
The Daily Post

বেলকুচিতে চাচাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

বেলকুচিতে চাচাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জাতীয় পরিচয়পত্রে ও স্কুল-কলেজের সনদে চাচাকে বাবা ও চাচিকে মা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি করছেন ও তাদের সম্পতি দখল করা চেষ্টা করছেন মেহেরাব আলী মধু নামের এক ব্যক্তি। মেহেরার আলী মধু তিনি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত বুজরক আলী শেখের ছেলে। 

তবে বর্তমানে মেহরাব আলী মধু তার বাবার নাম আব্দুল করিম শেখ ও মাতার নাম ফরিদা বেগম দাবি করে আসছেন কিন্তু তারা সম্পর্কে তার চাচা ও চাচি হন এবং আব্দুল করিম শেখ একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মেহরাব আলী মধু বর্তমানে বড় বেড়াখারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মেহেরাব আলী মধু সরকারি চাকরির আশায় উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম শেখকে বাবা ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগমকে মা বানানোর কৌশল নেন।

এরপর শিক্ষাসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবা মৃত বুজরক আলীর জায়গায় চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমের নাম বসান এবং মাতা সারা বানুর জায়গায় ফরিদা বেগম বসান। এরপর আব্দুর কাদেরের ছেলে সেজে ২০২০ সালের ৮ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। 

শুধু তাই নয় বীর মুক্তিযোদ্ধার পুত্র সন্তান না থাকায় তাদের সম্পত্তি দখল করা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আব্দুল কাদের স্ত্রী ফরিদা বেগম বলেন, মেহেরাব আলী মধু সম্পর্কে আমার ভাতিজা হয়। কিন্তু চাকরির নেয়ার লোভে আমার স্বামীকে তার বাবা ও আমাকে তার মা বানিয়ে জাতীয়পত্র ও স্কুল সনদে অন্তর্ভুক্ত করেন।

এ ছাড়াও আমার পুত্র সন্তান না থাকার কারণে আমার স্বামীর বসতভিটা জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
 
নাম গোপন রাখা শর্তে এলাকাবাসীর অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, মেহেরাব আলী মধু মূলত জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সেজে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় সরকারি চাকরি ও সব সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। তিনি বর্তমানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন।

এ বিষয়ে মেহেরাব আলী মধু বলেন, চাচা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি নেয়ার জন্য আমার জাতীয় পরিচয়পত্রে ও স্কুল কলেজের সনদে চাচাকে বাবা বানিয়েছি। এর জন্য যদি চাকরি চলে যায় যাক আমার আর চাকরি করার ইচ্ছে নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রতিবেদন জেলায় পাঠিয়ে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্কুল কলেজের সনদে বাবা-মায়ের নাম জালিয়াতি করে চাকরি নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টিএইচ