একসময়ের সবচেয়ে বেশি অবহেলিত দক্ষিণ চট্টগ্রাম এখন বিশাল সম্ভাবনায় এলাকয় পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রচেষ্টায় বর্তমানে কর্ণফুলী-আনোয়ারায় চলছে বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ।
এরমধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে নদীর দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের পরিবর্তন ইতোমধ্যে অনেকাংশই দৃশ্যমান। এ টানেল ধরেই চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ উন্নত হচ্ছে এবং পাশাপাশি রেলসংযোগও যুগান্তকারী সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
নির্মাণাধীন এই সড়কের দুপাশেই শিল্প কারখানা এবং আবাসনের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে নতুন করে চট্টগ্রাম মহানগরের আওতায় আনোয়ারায় মাস্টার প্লানের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এতে বিস্তৃত হবে মহানগরীর আয়তন। যার ফলে অনেকটা অদ্যুষিত গ্রামীণ জনপদ হিসেবে পরে থাকা নদীর দক্ষিণ পাড়েও এখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড হয়ে কর্ণফুলী টানেলের ভেতর দিয়ে যানবাহন উঠবে কক্সবাজার মহাসড়কে। এ লক্ষ্যে প্রস্তুত হচ্ছে আনোয়ারা থেকে শিকলবাহা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার ছয়লেনের সড়ক যার কাজও টানেলের নির্মাণের সঙ্গে শেষ হবে। এ ছাড়াও এগিয়ে চলেছে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের কাজ যা অতি শিগগিরই এ লাইনে ট্রেন চালানোর টার্গেট সরকারের।
কর্ণফুলীর দক্ষিণপাড় আনোয়ারায় রয়েছে কাফকো (কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, সিইউএফএল (চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড), কোরিয়ান ইপিজেড এবং বিভিন্ন ভারী শিল্প কারখানা। বঙ্গবন্ধু টানেল সেখানে শিল্পায়নের গতিকে আরও বেগবান করবে। চায়না ইকোনমিক জোন বাস্তবায়ন বড় একটি ধাপ এগিয়ে দেবে এই টানেল।
কেননা এর মাধ্যমে সুগম হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে আনোয়ারা উপজেলা নতুন করে রূপ পাচ্ছে উপশহরে। পরিবর্তন ঘটছে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায়।
টানেলের সংযোগ সড়কের জন্য শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার সড়কের ছয় লাইনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। ভৌগোলিক কারণে একদিকে সমুদ্র বন্দরের পাশে অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের ফলে আনোয়ারা হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ এক মাধ্যম। এসব কর্মযজ্ঞের কারণে চট্টগ্রাম শহরে ওয়ান সিটি টু টাউন স্বপ্নের দ্বার উন্মোচনে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
পারকি সমুদ্রসৈকতের পাশে চলছে বিশ্বমানের পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ। পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে ১৩ দশমিক ৩৬ একর জমিতে ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। এটির নির্মাণকাজ শেষ হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে পারকি সমুদ্রসৈকত।
১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে জি টু জি পদ্ধতিতে আনোয়ারা গহিরায় এলাকায় ৭৭৪ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এতে ৩৭১টি শিল্প কারখানা স্থাপন করা হবে।
দক্ষিণে আরও রয়েছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, ইকোনোমিক জোন, শিল্প পার্ক, বিদ্যুৎপল্লী, এশিয়ান হাইওয়ে এবং দোহাজারি-ঘুনধুম রেললাইন। এসব কর্মযজ্ঞের ফলে নগরীর মতো দক্ষিণ চট্টগ্রামেও মানুষের চাপ বাড়বে। প্রয়োজন হবে আবাসনের। অন্যদিকে এসব সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে একটি পরিকল্পিত উপশহর করতে মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
টিএইচ