মাগুরা শহরের হাসপাতাল পাড়ায় অবস্থিত আশ-শেফা প্রাইভেট হাসপাতালে মোবাইল কোর্টে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনবিহীন ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে প্রমাণিত অপরাধের ভিত্তিতে হাসপাতালের মালিক মো. আবু বকরকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং প্রতিষ্ঠানটি সাময়িকভাবে সিলগালা করা হয়।
রোববার (১ জুন) এ অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজ্জাদ হোসেন। অভিযানে অংশ নেয় মাগুরা জেলা প্রশাসন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, মাগুরা আর্মি ক্যাম্পের সেনা সদস্য ও পুলিশ বাহিনী যারা সম্মিলিতভাবে অভিযান সফল করেন।
অভিযানের সময় হাসপাতালের ফার্মেসি ও সংরক্ষণাগারে তল্লাশি চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনহীন বেশ কিছু ওষুধ ও কসমেটিকস পণ্য জব্দ করা হয়। জব্দকৃত দ্রব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: সেফট্রিয়াক্সোন ইনজেকশন (১০০ গ্রাম) ১০টি, লিতোভাস্টিন সিরাপ- ১ বোতল, ওমেপ্রাজল ৪০ মি.গ্রা. ৬টি, কসমেটিকস জাতীয় পণ্য মোট ৩৮টি। উদ্ধারকৃত পণ্যের মধ্যে বেশিরভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ ও লাইসেন্সবিহীন উৎস থেকে সংগ্রহ করা, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ওষুধ ও প্রসাধনী আইনে মো. আবু বকরকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। অনাদায়ে তার বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়। মামলা নম্বর: ১৭৫/২০২৫।
হাসপাতালটি মাগুরা পৌরসভার অনুমোদিত একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বৈধ ট্রেড লাইসেন্স (নং: ৮৪৮৮-০০) থাকলেও, ওষুধ ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা এবং আইনবহির্ভূত কার্যক্রমের প্রমাণ মেলায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। মালিক মো. আবু বকর, পিতা: মৃত ছবেদ আলী বিশ্বাস, ঠিকানা: সদর হাসপাতাল পাড়া, মাগুরা।
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, একটি প্রাইভেট হাসপাতালে যখন মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়, তখন তা শুধু প্রতিষ্ঠানটির জন্য নয়, পুরো জনগণের জন্য হুমকিস্বরূপ। প্রশাসন এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাবে। তিনি আরও জানান, জেলার অন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও পর্যায়ক্রমে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন অনিয়ম প্রতিরোধে প্রশাসনিক নজরদারির পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা এবং নিয়মিত পরিদর্শন জরুরি।
টিএইচ