শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
The Daily Post

মিঠামইনে পরকীয়ার জেরে খুনের মামলার ৪ আসামি গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

মিঠামইনে পরকীয়ার জেরে খুনের মামলার ৪ আসামি গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে পরকীয়ার জেরে খুন মামলার এজাহারনামীয় ৪ আসামিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে গত ২৩ জানুয়ারি প্রতিপক্ষের হামলায় মাছ ব্যবসায়ী মো. আব্দুল মালেক নিহত হয়। পরবর্তীতে নিহতের ভাই মো. হামিদুর রহমান বাদী হয়ে মিঠামইন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে হত্যামামলা রুজু করা হয়। প্রাথমিক তদন্ত ও স্থানীয়ভাবে জানা যায় ভিকটিম মো. আব্দুল মালেকের স্ত্রী সাহেদা বেগমের সঙ্গে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত আ. মালেকের দীর্ঘদিনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। 

বেশ কিছুদিন ধরে আসামি আ. মালেক ভিকটিমের স্ত্রী সাহেদা বেগমকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। ঘটনার দিন এজাহারে অভিযুক্ত আ. মালেক স্থানীয় একটি বাজারে সাহেদা আক্তারকে মারধর করে। স্ত্রীকে মারধরের ঘটনাটি জানতে পেয়ে ভিকটিম মালেক এর প্রতিবাদ করে এবং এর বিচার চেয়ে অভিযুক্ত মালেকের পরিবারের কাছে অভিযোগ দিলে তার পরিবারের লোকজন এ ঘটনার সুরাহা না করে উল্টো ভিকটিমকে গালমন্দ করে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। 

পরবর্তীতে ভিকটিম স্থানীয় লোকজনের কাছে ঘটনাটি জানিয়ে বিচার চাইলে অভিযুক্ত মালেক তার সহযোগীদের নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে দা, লাঠি, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ভিকটিমের বাড়িতে ঢুকে ভিকটিমকে এলোপাথারিভাবে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করে। ভিকটিমের স্ত্রী এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা তাকেও মারধর করে। এক পর্যায়ে আসামিরা মিলিতভাবে ভিকটিমকে মাটিতে শুইয়ে গলাটিপে ধরলে ভিকটিম অচেতন হয়ে যায়। 

ভিকটিমের স্ত্রীর ডাক-চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য কাটখাল বাজারে নেয়ার পথে অভিযুক্তরা অটোরিক্সার গতিরোধ করে এবং ভিকটিমকে পুনরায় মারপিট করে বলে বাদী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন। অবশেষে গুরুতর আহত অবস্থায় মিঠামইন উপজেলার কাটখাল বাজারে পল্লী চিকিৎসক নুরুল আমিনের কাছে ভিকটিমকে নিয়ে গেলে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভিকটিমকে মৃত বলে জানান। 

এ ঘটনায় মিঠামইন থানায় হত্যামামলা রুজুর পর কাটখাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নি.) মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলামকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত করা হয়। 

মিঠামইন থানার ওসি মো. আহসান হাবীব, পুলিশ পরিদর্শক (নি.) মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম ও সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্সের সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হবিগঞ্জ জেলার আজমেরীগঞ্জ থানাধীন রায়লা এলাকায় স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে করে মামলার এজাহারনামীয় অভিযুক্ত মো. হুমায়ুন, মো. ওসমান মিয়া এবং শুক্রবার ভোরে মিঠামইন উপজেলার বৈরাটি বাহেরচর এলাকা থেকে এজাহার নামীয় অভিযুক্ত মো. সিরাজ মিয়া (৫৫) এবং মো. নাদিফ মিয়া ওরফে নাদিমকে গ্রেপ্তার করে। 

মিঠামইন থানার ওসি আহসান হাবীব জানান, গ্রেপ্তার এজাহারনামীয় আসামিদের ইতোমধ্যে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

টিএইচ