রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫
ঢাকা রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Post

ময়মনসিংহে আধুনিক কসাইখানা নেই, মাংস বিক্রিতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহে আধুনিক কসাইখানা নেই, মাংস বিক্রিতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) এলাকায় নেই কোনো আধুনিক কসাইখানা কিংবা নির্দিষ্ট পশু জবাই কেন্দ্র। ফলে প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন বাজারে পশু জবাই ও মাংস বিক্রি হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের কেন্দ্রীয় মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, শানকিপাড়া, চরপাড়া, কাঠগোলা, খাগডহর, কেওয়াটখালি, আকুয়া, বাকৃবি, শম্ভুগঞ্জসহ অন্তত ১৪টি বাজারে প্রতিদিন গরু, খাসি, ছাগলসহ নানা ধরনের পশু জবাই ও মাংস বিক্রি হয়। এসব পশু কোথায় এবং কীভাবে জবাই হচ্ছে, তা তদারকির জন্য নেই কোনো নিরীক্ষা টিম বা ভেটেনারি চিকিৎসক।

মসিকের মাস্টার রুলে কর্মরত আব্দুল হালিম বলেন, গাঙ্গিনাপাড়, মেছুয়া বাজার ও অন্য এলাকায় প্রতিদিন সকালে গোপনে পশু জবাই হয়। পশু শনাক্ত করে সিল মারার কাজ আমি নিজেই করি। তবে এতে কোনো পশু চিকিৎসক অংশ নেন না। ফলে অসুস্থ এমনকি গর্ভবতী পশুও জবাই হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বাজারে ওজনে কম দেয়া, নোংরা পরিবেশে মাংস সংরক্ষণ এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে মাংস বিক্রির ঘটনা নিয়মিত ঘটে। একইসঙ্গে প্রতি পশুতে সিল মারার জন্য নেয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের খাদ্য ও স্যানিটেশন পরিদর্শক দীপক মজুমদার বলেন, আমাদের অধীনে এখনো আধুনিক কসাইখানা চালু হয়নি। পশু বিভাগের চিকিৎসকও নেই। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। মসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. এইচ.কে. দেবনাথ জানান, নির্ধারিত পশু চিকিৎসক না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না। ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত জনবল পেলে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জবাইয়ের উদ্যোগ নেয়া যাবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ জেলা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, পশু জবাইয়ের আগে ও পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম রয়েছে। সিটি করপোরেশনের ভেটেনারি সার্জনের দায়িত্বে কেউ না থাকায় তারা আমাদের কাছে অতিরিক্ত সেবা চাইলে আমরা সহযোগিতা প্রস্তুত। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় বিগত ৮ বছর আগে সিটি করপোরেশন হওয়ার পরও এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এদিকে স্থানীয় নাগরিকরা বলছেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় দ্রুত আধুনিক কসাইখানা স্থাপন এবং নির্ধারিত পশু জবাই কেন্দ্র চালু করা অত্যন্ত জরুরি। বাজার ব্যবস্থাপনা যথাযথ নজরদারি না থাকলে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

বিভাগীয় কমিশনার ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. মোখতার আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, আমি খোঁজ-খবর নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করব।

টিএইচ