মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post

লংগদুতে একাধিক সেতু থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক

লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি

লংগদুতে একাধিক সেতু থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক

সেতু নির্মাণের ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এর সুফল থেকে বঞ্চিত রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনীমূখ ইউনিয়নের জনগণ। অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক তৈরি না হওয়ায় ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে আছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু।

উপজেলার মাইনীমূখ ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম জারুল বাগান একাধিক গ্রামের হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা পারাপার। কাপ্তাই হ্রদের মাইনী নদীর অববাহিকায় দু’পাড়ের সংযোগস্থলের উপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণের পর অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক তৈরি না করায় সেতু দিয়ে পারাপার হতে পারেনি এপার-ওপারের কেউ।

এলাকাবাসীরা জানান, নদীর ওপারে একটি মাদরাসা, দোকানপাটসহ ব্যবসায়ীক ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে আসা যাওয়া করতে হয়। এলাকার অধিকাংশ মানুষই এ পথের ওপর নির্ভর। স্থানীয়রা বলেন, বর্ষকালে নৌকা আর শুকনো মৌসুমে কাঠের তক্তা বা লম্বা কোন গাছের গুড়ি তাদের নদী পারাপারের একমাত্র উপায়।

ফলে তাদের যাতায়াতের সমস্যা নিত্যদিনের। বছর ছয়েক আগে নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ হলে তারা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু সেই সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড ও সংযোগ সড়ক তৈরি না হওয়ায় সেতুটি তাদের কোনো কাজে লাগেনি।

এদিকে, আটারকছড়া ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডের মিলন মুন্সীর বাড়ির সামনে খালের উপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যার দু’পাশে কোনো রাস্তা নেই। সেতুটি ২০১২-১৩ অর্থবছরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছে রাঙামাটি জেলা পরিষদ।

এরপর ১ যুগ পেরিয়ে গেলেও সেতুটি জনগণ ব্যবহার করতে পারেনি। কারণ, সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তাবিহীন জলবিশিষ্ট খালের উপর। এই সেতুটিরও দু’পাশে ওঠা-নামার জন্য কোনো রাস্তা বা মাটি নেই। ফলে অকেজো হয়ে পড়ে আছে এ সেতুটি।

স্থানীয় আব্দুর রব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

কেবল এই দুইটি সেতু নয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পিআইও অফিসের এমন একাধিক সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য গাথাছড়ার সন্দ্বীপ টিলা ও কতুবটিলায় এমন কয়েকটি সেতু রয়েছে। যেগুলোর অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক নেই। ফলে সেতুগুলো কোনো কাজে আসছে না এলাকাবাসীর। অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক তৈরি করে সেতুগুলোকে ব্যবহারের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনীমূখ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল জানান, মাইনী নদীর ওপর এবং গাথাছড়ার বিভিন্ন এলাকার সংযোগ সড়ক বিহীন যে সেতুগুলো রয়েছে সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা রেখেছি। আশা করি শিগগিরই অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। এতে করে দুই পারের মানুষের ভোগান্তি কমবে।

অন্যদিকে আটারকছড়া ইউপি চেয়ারম্যান অজয় মিত্র চাকমা বলেন, মিলন মুন্সির বাড়ির খালের উপর সেতুটি নির্মাণে দীর্ঘদিন পার হলেও এর সংযোগ সড়ক করা হয়নি। আমি এবিষয়ে জেলা পরিষদ ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সময়ই এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে লংগদু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, সেতুগুলো নির্মাণের সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। এভাবে সংযোগ সড়ক ছাড়া সেতুগুলো তৈরি করা ঠিক হয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর। কিছুদিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব অ্যাপ্রোচ ও সংযোগ সড়ক তৈরির কাজ শুরু করা হবে।

টিএইচ