মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Post

‘যুদ্ধবিরতির অনুরোধ ভারতই করেছে, পাকিস্তান করেনি’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

‘যুদ্ধবিরতির অনুরোধ ভারতই করেছে, পাকিস্তান করেনি’

পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘিত হলে পাল্টা জবাব হবে চূড়ান্ত, নির্দয় ও ব্যাপক—এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে তারা দাবি করেছে, সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তান নয়, বরং ভারতই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানিয়েছে।

সোমবার জিও নিউজের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আগ্রাসন সহ্য করা হবে না। জবাব হবে অত্যন্ত কঠোর এবং চূড়ান্ত।” এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীর (পিএএফ) এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব আহমেদ এবং নৌবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব নেভাল স্টাফ (অপারেশনস) ভাইস অ্যাডমিরাল রাজা রব নেওয়াজ।

যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে জেনারেল চৌধুরী বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে রেকর্ডে রাখতে চাই, যুদ্ধবিরতির কোনো অনুরোধ পাকিস্তানের পক্ষ থেকে করা হয়নি। বরং ৬ ও ৭ মে রাতে ভারতের কাপুরুষোচিত হামলার পর তারাই প্রথমে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানায়।” তিনি জানান, ১০ মে পাকিস্তানের পাল্টা জবাব ও প্রতিশোধমূলক হামলার পর আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘বুনইয়ান উল মারসুস’ অভিযানে পাকিস্তান ২৬টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়—যেগুলো থেকে পাকিস্তানি নাগরিকদের ওপর আগ্রাসন চালানো হয়েছিল। এসব স্থাপনা ছিল ভারতের মূল ভূখণ্ড ও ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মিরে।

লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল ভারতীয় বিমানঘাঁটি ও সামরিক ইনস্টলেশন—যেমন সুরতগড়, সিরসা, আদমপুর, ভুজ, নালিয়া, বাথিণ্ডা, বারনালা, হরওয়ারা, আওন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, মামুন, আম্বালা, উদমপুর ও পাঠানকোট। এছাড়া ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ কেন্দ্র, এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং রসদ ঘাঁটি—যেমন উরি ফিল্ড সাপ্লাই ডিপো ও পুঞ্চের রাডার স্টেশনেও হামলা চালানো হয়।

জেনারেল চৌধুরী আরও দাবি করেন, এমন সামরিক সদরদপ্তর ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রও ধ্বংস করা হয়েছে, যেগুলো থেকে ‘প্রক্সি’ বা সন্ত্রাসী উপাদানদের সহায়তা দেওয়া হতো। এর মধ্যে কেজি টপ ও নওশেরায় অবস্থিত ১০ম ও ৮০তম ব্রিগেডের ঘাঁটি উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে অবস্থিত ভারতীয় কামান, গোলাবারুদ ভাণ্ডার ও সামরিক পোস্টগুলো থেকে আজাদ কাশ্মিরে বেসামরিক জনগণের ওপর যেসব হামলা হয়েছিল, সেসব স্থানেও প্রতিশোধমূলক হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি কিছু ঘাঁটি সাদা পতাকা উত্তোলন করে যুদ্ধবিরতির অনুরোধও জানায়।

পাকিস্তানের প্রধান সামরিক মুখপাত্র আরও জানান, ভারতের বিরুদ্ধে সাইবার হামলাও চালানো হয়েছে, যার ফলে তাদের সেনাবাহিনীর নির্ভরযোগ্য অবকাঠামোগুলোর কার্যক্ষমতা সাময়িকভাবে ভেঙে পড়ে।

জেনারেল চৌধুরী বলেন, “ভারতের সেনাবাহিনীর বর্বর হামলার জবাব আমরা কঠোরভাবে দিয়েছি, এবং ভবিষ্যতেও এমন প্রতিক্রিয়া অব্যাহত থাকবে, যদি পাকিস্তানের ভূখণ্ডে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ হয়।”

টিএইচ