সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
ঢাকা সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Post

বিস্ফোরক মামলায় ৪০ বিডিআর জওয়ানের জামিন : পিলখানা বিদ্রোহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিস্ফোরক মামলায় ৪০ বিডিআর জওয়ানের জামিন : পিলখানা বিদ্রোহ

২০০৯ সালে পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তরে সংঘটিত বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে থাকা ৪০ জন বিডিআর জওয়ানকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

সোমবার আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়া গত ৮ মে এ জামিনের আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মো. বোরহান উদ্দিন জানান, আসামিদের মধ্যে অনেকেই সাজাপ্রাপ্ত, এমনকি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তও ছিলেন। জামিন আবেদনকারী আসামিদের নথিপত্র যাচাই করে আদালত ৪০ জনকে জামিন দেন এবং বাকিদের জামিন নামঞ্জুর করেন।

জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রেজাউল করিম, শাজাহান, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মো. শামীম, ওয়ালি উল্লাহ, হাবিবুর রহমান, তারিকুল ইসলাম, বনি আমিন চৌধুরী, মো. এ বারিক, ইমতিয়াজ আহমেদ নবীন, মোয়াজ্জেম হোসেন, মিজানুর রহমান, সিদ্দিকুর জামান জোয়ার্দার ওরফে লিটন, মো. এ মোনাফ, আকিদুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, মিজানুর রহমান, কৌতুক কুমার সরকার, মো. সালাউদ্দিন, সোহরাব হোসেন, কামাল হোসেন, মো. ইশহাক, দারুল ইসলাম, শ্রী সুমন চক্রবর্তী, আবু সাঈদ, সেজান মাহমুদ, মো. সেলিম, বিধান কুমার সাহা, মাসুম হাসান, ফিরোজ মিয়া, শ্রী তাপস কুমার বিশ্বাস, রফিকুল ইসলাম, কামাল মিয়া, নূর-এ-আলম মিয়া, এনামুল হক, শফিকুল ইসলাম, রবিউল আলম এবং আল আমিন।

এর আগে, গত ১৯ জানুয়ারি একই আদালত ১৭৮ বিডিআর জওয়ানকে জামিন দেন। পরবর্তীতে ২৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগার থেকে তারা মুক্তি পান।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। এতে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। খালাস পান ২৮৩ জন। এ পর্যন্ত মামলার আসামিদের মধ্যে ৫৪ জন মারা গেছেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অপরদিকে, ৮৩ জনের খালাস ও সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষও লিভ টু আপিল করেছে, যা বর্তমানে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় ২০১০ সালে ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়, যা এখনো চলমান।

সম্প্রতি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার পুনঃতদন্তের দাবি ওঠে। ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর শহীদ সেনা পরিবারের সদস্যরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দেন। সরকার ২৪ ডিসেম্বর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে, যার কাজের সময়সীমা ৯০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

টিএইচ