শুধু গোপালগঞ্জ নয়, বাংলাদেশের কোথাও আওয়ামী লীগকে দাড়াতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমদ।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল পূর্বে বক্তব্যকালে তিনি এই হুশিয়ারি দেন।
এ সময় জালাল উদ্দিন আহমদ বলেন, খুনি শেখ হাসিনা এদেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তার ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয় নাই। তার দোসররা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করতেছে। বর্তমান সরকার দোসরদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। গত দুই দিন আগে গোপালগঞ্জে এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পলাতক নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গোপালগঞ্জে যারা আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ করে তারা যে ন্যাক্কারজনক হামলা করেছে এই হামলার নিন্দা করার ভাষা আমাদের নাই। এই বাংলাদেশে গোপালগঞ্জ নয়, সারা বাংলাদেশের কোথাও আওয়ামী লীগকে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। যেখানেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ পাওয়া যাবে জনগণ প্রতিরোধ করবে।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় করার জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমরা সরকারকে বলি, এখনো সময় আছে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। বাংলাদেশের জনগণ বাংলাদেশের কোথাও মানবাধিকারের কার্যালয় দেখতে চায় না। যেকোনো মূল্যে এই সিদ্ধান্ত আমরা সরকারকে প্রত্যাহার করতে বাধ্য করবো।
জালাল উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে চাঁদাবাজ দখলবাজ ও সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য চলছে। আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, তারা যেসব জায়গায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী করতো তারা আজকে নাই, কিন্তু আরেকটি গ্রুপ সেখানে গিয়ে দখল করে বসে আছে। সরকারকে বলি, শক্তিশালী সরকার হন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করবো। বাংলাদেশে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান হবে না।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে আমরা জীবন দিয়েছি। ২০২১ সালে এবং ২০২৪ সালেও আমরা জীবন দিয়েছি। খুনি শেখ হাসিনা শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জুলাই আগস্টে শত শত মানুষকে গণহত্যা করেছে। শেখ হাসিনার অত্যাচারে একজন ঘরের শিশু পর্যন্ত রক্ষা পাই নাই। এক বছর হয়ে গেল, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বারবার বলে আসতেছি, আপনারা খুনি শেখ হাসিনা এবং তার দোসরদের বিচার করুন, একটি দৃশ্যমান পর্যায়ে নিয়ে আসুন। এখনো আমরা খুনি হাসিনার বিচার দৃশ্যমান দেখতে পারতেছি না। দেশের জনগণ খুনি হাসিনাসহ তার দোসরদের ফাঁসির কাস্টে ঝুলতে দেখতে চায়। অবিলম্বে দুই একটি হত্যার রায় জাতি প্রত্যাশা করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের বিচার হয়নি। এখনো তাদেরকে অস্ত্র হাতে দেখা যায়। জুলাই মাস, আন্দোলন সংগ্রামের মাস। আর যেন কোনো ফ্যাসিস্ট মাথাচাড়া দিতে না পারে। যদি তারা মাথা চাড়া দেয় তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
পরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুলাই আগস্ট গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনটির নেতারা। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইট থেকে শুরু করে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগরে গিয়ে শেষ হয়।
টিএইচ