বিপ্লবীদের উপর হামলাকারী ও হত্যা মামলার তিন আসামিকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ মে) তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর ১৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিল মীর রেজাউল ইসলাম বাবু ওরফে মাছ বাবু (৫৫), এই মাছ বাবু আওয়ামী লীগ শাসনামলে চোড়হাস ফুলতলার বাজার, দোকানপাট, অটো রিক্সা স্ট্যান্ডসহ চোড়হাস এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।
৫ আগস্ট এর পর বিএনপির জনৈক এক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে তার এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছিল। বাবু গ্রেফতার এড়াতে ঢাকায় পালিয়ে গেলে বিএনপির ওই নেতার ছত্রছায়ায় বাবুর ছেলেরাসহ পরিবার এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নেয়। এভাবেই বাবু কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থসম্পাদক ও আওয়ামী লীগের অর্থদাতা ওমর ফারুক (৪৭) এবং কুষ্টিয়া শহর যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও আলোচিত এনআইডি জালিয়াতির অন্যতম হোতা আশরাফুজ্জামান সুজন (৪৬)। তারা সকলেই জুলাই আন্দোলনকারীদের উপর হামলা ও হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মীর রেজাউল ইসলাম বাবু ওরফে মাছ বাবু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে রাতের ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়। তিনি ৫ আগস্ট এবং এর আগে ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একাধিকবার হামলা চালায়। তিনি নিজেকে কুষ্টিয়ার দ্বিতীয় নেতা হিসাবে দাবি করতেন এবং সভা সমাবেশে নিজেকে আতার পরের নেতা বলে ঘোষণা দিতেন।
ওমর ফারুক আওয়ামীলীগের অর্থদাতা হিসেবে পরিচিত। তিনি আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সরকারি জায়গা দখল সহ নানা অপকর্মের হোতা ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের আস্থাভাজন ব্যক্তি এবং তাদের ব্যবসায়িক অংশীদার বলেও এলাকায় প্রচলিত রয়েছে।
আশরাফুজ্জামান সুজন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন কুষ্টিয়া এনএস রোডের কোটি কোটি টাকার জমি জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিতে জমির মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে করেন। এবং সেই এইআইডি ব্যবহার করে জমি রেজিস্ট্রি করেন। এছাড়াও তিনি জমি জালিয়াতি মামলার আসামি।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমাদের একাধিক টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের হত্যা মামলা রয়েছে।’
টিএইচ