নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ক্লুলেস ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক বাবর হোসেন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার মূল হোতাকে আটক করেছে র্যাব-১১। নিহত বাবর উপজেলার নোয়াখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম করিমপুর এলাকার মো. সেলিমের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ড বিষয়টি জানান। এর আগে, গত সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার মাইজদী পেট্রোল পাম্প এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মনিরুল ইসলাম মামুন নোয়াখালী পৌরসভার মধ্যম করিমপুর এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে বাবরের ব্যবহূত মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত একটি গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো নিহত বাবরের ব্যবহূত অটোরিকশাটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।
র্যাব-জানায়, গত ৯ এপ্রিল রাতে ভাড়া নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক বাবরের। এরপর থেকে স্বজনেরা যোগাযোগ করেও বন্ধ পাচ্ছিলেন তার মুঠোফোন। পরে বৃহস্পতিবার নোয়াখালী সদর উপজেলার কোম্পানিঘাট-সংলগ্ন স্লুইচগেট এলাকার একটি কবরস্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করলেও তার ব্যবহূত মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি নিখোঁজ ছিল। পরবর্তীতে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে র্যাবের একাধিক টিম কাজ করে।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারের পর হত্যাকারী মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডে নিজে জড়িত থাকার বিষয়ে বিস্তারিত স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, কতিপয় ব্যক্তির কাছ থেকে ধার নেয়া ৪৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ৯০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হওয়ায় অতিরিক্ত টাকা সংগ্রহে তার পরিচিত বাবরের অটোরিকশা বিক্রি করে টাকা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
সে মোতাবেক তাকে নিয়ে দত্তেরহাট এসে ফ্রুটিকা জুসের সঙ্গে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে বিনোদপুর ইউনিয়নের জালিয়াল গ্রামের নির্জন বাগানে অটোরিকশা রেখে বাবরকে নিয়ে প্রথমে সোনাপুর যায়। তারপর সিএনজি যোগে পূর্বচর উড়িয়ার সুইসগেট সংলগ্ন কৃষি অফিসের সামনে ডান দিকে নির্জন স্থানের সবজি বাগানে নিয়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দুর্বল করে বাবরকে তার গায়ের লিলেন গেঞ্জি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ড বলেন, ভিকটিমের স্যান্ডেল বাঁশ ঝাড়ের পাশে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত লিলেন গেঞ্জিটি তার পাশের কলাবাগানে রেখে পালিয়ে যায়। শুধু কেবল টাকার নেশায় সে উক্ত হত্যাকা্ল ঘটিয়েছে।
আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামির স্বীকারোক্তি বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি হিসাবে রেকর্ড প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়াও খোওয়া যাওয়া অটোরিকশা উদ্ধার ও অপরাপর সহযোগী আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
টিএইচ