গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার আনারস দেশ জুড়ে ক্ষ্যাতি অর্জন শুরু করেছে, যত দিন যাচ্ছে ততই কাপাসিয়ার আনারস দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এই আনারস খুবই সুস্বাদু ও রসালো মিষ্টি যা অন্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক গুণে ভাল। আকারে রঙে দেখতে খুই চমৎকার। গত কয়েক বছরে আনারসের গুনগত চাহিদা বেড়ে গেছে অনেক। মৌসুমের শুরু থেকে আনারসের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে সংশ্লিটরা ধরনা করছেন।
উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আনারসের চাষ হচ্ছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়। অতি লাভের আশায় কৃষকরা আনারস চাষের উপর ঝুঁকে পড়েছে। এলাকার পতিত জমি আনারসের উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা মৌসুমি ফলন হিসেবে আনারস চাষ শুরু করে দিয়েছে। উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের জলপইতলা বাজারে ভোর রাতে ফজরের আজান শোনার সাথে সাথেই ভ্যানগাড়ি, অটোরিকশা, সাইকেল ও মাথায় করে আনারস নিয়ে আসতে শুরু করে চাষিরা।
উপজেলার লোহাদি, বারাব, বীর উজলী, কেন্দুয়াব, বেলাশী, গিয়াসপর, ডুমদিয়া, বড়দিয়া, নরসিংহপুর. রাওনাট, রানীগঞ্জ, তারাগঞ্জ, কাপাসিয়া বাজারসহ প্রতিটি এলাকা থেকে প্রচুর আনারস বাজারে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকালে কৃষকরা বাজারে দূর-দূরান্ত থেকে ছোট-বড় অটো বা লেগুনা দিয়ে আনারস কৃষকরা বাজারে নিয়ে আসে বিক্রির জন্য বাজারে খুচরা ও পাইকারী দরে সেই আনারসগুলো বিক্রি হয় বলে জানা যায়।
চাষিরা গাড়িতে রাখা আনারসগুলো সাইজ অনুযায়ি প্রতি পিস আনারস বড় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মাঝারি ১৫ থেকে ২০ টাকা, ছোট সাইজের আনারস ৭ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। বাগান মালিক ও আড়ৎদার দের তথ্য মতে বাজারে প্রতিদিন দশ থেকে বিশ হাজার পিস আনারস বিক্রি হয়। বাজারের ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৪০/৪৫ জন পাইকার আসেন বিভিন্ন এলাকা থেকে।
কালীগঞ্জের পাইকার মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, অন্য বছরের চেয়ে এবার আনারসের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আমরা ২ মাস যাবৎ এই মৌসুমে আনারস বাজার থেকে কিনে নিয়ে বিক্রি করছি, কাপাসিয়ার আনারসের স্বাদ-গন্ধ অনেক ভাল এবং ক্রেতাদের চাহিদা অনেক হওয়াতে আমরা দামও ভালো পাচ্ছি। আমি প্রতিদিন এসব বাজার থেকে আনারস ক্রয় করি।
ঢাকা থেকে আসা হূদয় জানান, এই বাজারে ভাল আনারস পাওয়া যায়, দামও কম। প্রতিদিন আমি খুব সকালে চলে আসি। আনারসের ফলন ভালো হয়েছে কিন্তু আনারস সংরক্ষণের অভাবে পচে যাচ্ছে। পাকা আনারস বেশি দিন বাগানে রাখা যায় না, বৃষ্টি হলে সেই আনারস বাগানেই পচে যায়। সে জন্য আনারস সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি।
কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন কুমার বসাক জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৯৫০ টন।
টিএইচ