শেরপুরের নালিতাবাড়ী ঈদ উপলক্ষে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের ১১৫ বস্তা চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। তবে এ সময় জড়িত কাউকে ঘটনাস্থলে না পাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। গত বুধবার মধ্যরাতে উপজেলার ১নং পোড়াগাঁও ইউনিয়ন থেকে এসব চাল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা করার কথা জানিয়েছেন ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি।
সূত্র জানায়, পোড়াগাঁও ইউনিয়নের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ২ হাজার ৫৫৫ জন উপকারভোগীর জন্য ২৫ হাজার ৫৫০ কেজি ভিজিএফের চাল বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দ অনুযায়ী গত বুধবার দিনব্যাপী পরিষদ কার্যালয় থেকে চাল বিতরণ কার্যক্রম চলে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হতদরিদ্র অনেকে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের কাছে চালের স্লিপ চেয়েও পাননি। অথচ দিনব্যাপী কিশোর বয়সী ছেলেরা দলবেঁধে একাধিক স্লিপ হাতে নিয়ে ১০ কেজি করে চাল উত্তোলন করেছে। টাকার বিনিময়ে চাল উত্তোলনের পর ওইসব চাল ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। পরবর্তীতে পরিষদের আশপাশের দুটি দোকান, একটি বাড়ি ও একটি ক্লাবে মজুত করে রাখা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকজন ইউপি সদস্য বেশিরভাগ স্লিপ বিতরণ না করে তা গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে ১০ টাকার বিনিময়ে কিশোর বয়সী ছেলেরা স্লিপের অনুকূলে ১০ কেজি করে চাল উত্তোলন করে ফড়িয়ার কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আমির হোসেনকে ট্যাগ অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা থাকলেও দিনভর প্রকাশ্যে চলে এ কার্যক্রম। এদিকে বিষয়টি টের পেয়ে বিকেলে এলাকাবাসী ইউএনওকে জানালে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মককর্তার কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। পরে মধ্যরাত পর্যন্ত চারটি স্থানে লুকিয়ে মজুত করে রাখা ওই চাল জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন জানান, বরাদ্দ অনুযায়ী স্লিপ তিনি ইউপি সদস্য ও উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে কে বা কারা এসব গোপনে বিক্রি করেছে তা তার জানা নেই।
ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি জানান, জব্দকৃত চাল পুলিশ হেফাজতে দিয়ে নিয়মিত মামলা করা হবে। তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নালিতাবাড়ী থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, এখনো মামলা হয়নি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরখাস্ত পেলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
টিএইচ