বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
The Daily Post

শেকৃবিতে ডেঙ্গু আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

শেকৃবি প্রতিনিধি

শেকৃবিতে ডেঙ্গু আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে শতাধিক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এতে আবাসিক হলগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধিতে সময়মতো পরিষ্কার না করা, নামমাত্র ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটি’ এবং হল প্রশাসনের উদাসিনতাকে দায়ী করছে শিক্ষার্থীরা।

আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের তথ্যমতে, গত দুই সপ্তাহে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে আটজন, শেরেবাংলা হলে পাঁচজন, কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলে ২৮ জন, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে চারজন, নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলে ৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। কেউ কেউ জ্বরের লক্ষণ দেখামাত্র বাসায় চলে গেছে।

আক্রান্তদের বেশির ভাগ হলে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। জুলাই মাসের শুরু থেকেই ক্যাম্পাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলে অষ্টম তলা, নবম তলা এবং দশম তলার আবাসিক ছাত্ররা বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে শেখ হাসিনা হলে আক্রান্তদের মধ্যে ২য় তলা এবং ৫ম তলার ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। এ ছাড়া শিক্ষকদের আবাসিক ভবন শাপলা কোয়ার্টারে চারজন আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঈদের ছুটিতে দীর্ঘদিন হল অপরিষ্কার অবস্থায় ছিল। হল খুললেও পরিষ্কার করা হয়েছে দেরিতে। এ সময়েই ডেঙ্গুর বিস্তার শুরু হয়। এছাড়া ফ্লোরগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। কখনো এক সপ্তাহ, কখনো ১০ দিন পর পর ময়লার বালতি, বাথরুম পরিষ্কার করা হয়। এগুলোতে জমে থাকা পানিতে সহজে মশার বিস্তার হচ্ছে। নিয়মিত ওষুধ না ছিটানোর কারণে মশার উপদ্রব বাড়ছে।

নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলের ১০ তলার এক আবাসিক ছাত্র বলেন, এ ফ্লোরের প্রায় প্রতি রুমেই ডেঙ্গু রোগী। ঈদের ছুটির পর অনেক দেরিতে আমাদের এখানে পরিষ্কার করা হয়েছে। এখনো নিয়মিত ময়লার বালতি পরিষ্কার করা হয় না। এক সপ্তাহ পর পর বাথরুম পরিষ্কার করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেখ হাসিনা হলের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক ছাত্রী বলেন, হাসপতালে ভর্তি নেয় না এখন। যার কারণে হলে থেকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে একজন থেকে অন্য জনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ৫ তলার পাশে ক্যান্টিনের ছাদ। ওইখানে পানি জমে থাকে। এ ছাড়া ২ তলার পাশে ডাইনিং এর ছাদ। নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে সহজেই এখানে মশা জন্মাতে পারে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. হাসানুজ্জামান আকন্দকে আহ্বায়ক এবং প্রধান খামার তত্ত্বাবধায়ক শামসুল আলম সাগরকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের কমিটি করা হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে কীট বিজ্ঞানী থাকা সত্ত্বেও কমিটিতে রাখা হয়েছে একজন সহকারী অধ্যাপককে। সদস্য সচিব শামসুল আলম প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে ইন্ডিয়ায় আছেন চিকিৎসার কাজে। আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান আকন্দ অসুস্থতার কারণে এবার সময় দিতে পারছেন না।

নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলের প্রভোস্ট ড. সিরাজুল ইসলাম খান বলেন, আমরা শুরু থেকেই ঔষধ ছিটিয়েছি। আমি একমাত্র প্রভোস্ট, নিজে থেকে বাইরে থেকে লার্ভিসাইড কিনে এনে প্রতিটি তলায় ছিটিয়েছি। খামার থেকে শ্রমিক নিয়ে হল পরিস্কার করেছি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল বলেন, আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিন স্তরের ব্যবস্থা নিয়েছি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন হলগুলোতে নিয়মিত ফগিং করছে। আমরা নিজ উদ্যোগে মশার ওষুধ ও কেমিকেলস কিনে এনে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। সব হলের প্রভোস্টদেরও হল পরিষ্কার রাখতে ছাত্রদের নিয়ে কমিটি করতে বলেছি। তবে ছাত্রদেরও সচেতন হতে হবে।

টিএইচ