শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
ঢাকা শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর

ভারতীয় কোম্পানির ২৫০ কোটি টাকার চুক্তি বাতিল করল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতীয় কোম্পানির ২৫০ কোটি টাকার চুক্তি বাতিল করল বাংলাদেশ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি কোম্পানির সঙ্গে ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের এক চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি মুদ্রামান অনুযায়ী চুক্তিটির মূল্য প্রায় ২৫৬ কোটি ২০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার সমান ১২২ টাকা ধরে)।

শুক্রবার (২৩ মে) ভারতের প্রথম সারির একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম বলছে, চুক্তির আওতায় কলকাতা-ভিত্তিক ওই প্রতিরক্ষা কোম্পানির কাছ থেকে নৌবাহিনীর জন্য ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের (প্রায় ১৮০ কোটি রুপি) টাগ বোর্ড কেনার কথা ছিল বাংলাদেশের।

গত শনিবার ভারত তাদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপরই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নৌবাহিনীর টাগ বোট কেনার ক্রয়াদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত আসল বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সেভেন সিস্টার্সকে স্থলবেষ্টিত অঞ্চল হিসেবে আখ্যা এবং এই অঞ্চলে সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে বাংলাদেশকে অভিহিত করেছিলেন। একই সঙ্গে চীনকে এই অঞ্চল ব্যবহার করে ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেওয়ায় ভারত সরকার তাদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, বাংলাদেশ সরকার কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের (জিআরএসই) সঙ্গে ১৮০ কোটি রুপির চুক্তি বাতিল করেছে। এই কোম্পানিটি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত হয়।

এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি জাহাজ তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে। ভারতীয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজের কাজও তারা করে। কোম্পানিটি দেশের পুঁজিবাজারকে বলেছে, “আমরা আপনাদের জানাচ্ছি বাংলাদেশ সরকার তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে।”

সংবাদমাধ্যম হিন্দু বিজনেস লাইন বলেছে, বাংলাদেশ সরকার ও এই কোম্পানির পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে ক্রয়াদেশ বাতিল করা হয়েছে। কলকাতা-ভিত্তিক কোম্পানি জিআরএসই বাংলাদেশের কাছ থেকে ৮০০ টন ওজনের টাগ বোটটি তৈরির আদেশ পেয়েছিল।

পিএসইউওয়াচের তথ্য বলছে, টাগ বোটটি ৬১ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৫ দশমিক ৮০ মিটার প্রশস্ত হতো। এটির গভীরতা হতো ৬ দশমিক ৮০ মিটার। সাধারণত এই টাগ বোটের উচ্চ বোলার্ড টানার সক্ষমতা থাকে। সামনের দিক দিয়ে এটির টানার ক্ষমতা ৭৬ টন, পেছন থেকে প্রায় ৫০ টন।

দীর্ঘ দূরত্বে জাহাজ টেনে আনা, বার্থিংয়ে সহায়তা, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, অগ্নিনির্বাপণ এবং সমুদ্রে সীমিত দূষণ নিয়ন্ত্রণের কাজে এই টাগ বোট ব্যবহার করা হয়।

গত বছরে জুলাইয়ে ভারতীয় এই কোম্পানির প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে টাগ বোট কেনার চুক্তিটি হয়েছিল। ২০২৩ সালে ঢাকা ও নয়াদিল্লির প্রতিরক্ষা খাতে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা চুক্তি হয়। সেই চুক্তির আওতায় এই টাগ বোটটি ছিল প্রথম বড় কোনও ক্রয়াদেশ।

ভারতীয় এই ঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্য আরও অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। যেগুলো সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে শুরু হয়। ইটিভি ভারতের তথ্য অনুযায়ী, গত আট বছরে বাংলাদেশকে ভারত লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ৮ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে।

টিএইচ