মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় গৌরিনগর-আলগাগাড়ির মাঠে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়ায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে প্রায় ২শ একর জমির ফসল। চাষিদের অভিযোগ একই উপজেলার মৃত মঙ্গল মিয়ার ছেলে আব্দুস সালাম ও তার ভাই মুজিবনগর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মাঠের পানি নিষ্কাশনের কালভার্টটি বন্ধ করে দেয়।
ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে ওই মাঠের ধান ও পাট ডুবে ফসলের ফলন বিপর্যয় দেখা দেয়। চলতি মৌসুমে আগাম বর্ষা হওয়ায় আগে ভাগেই ডুবে গেছে ধান। সেই সঙ্গে পানি জমে পচে যাচ্ছে শত শত বিঘা জমির পাট।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আ.লীগ নেতার পুকুরের পানি ও মাছ অন্যত্র চলে যাওয়ার আশঙ্কায় যুগ যুগ ধরে মাঠের পানি নিষ্কাশনের কালভার্টটি মাটি দিয়ে ভরাট করে দিয়েছে। এতে পুরো মাঠের পানি বের হবার কোন রাস্তা পাচ্ছে না। ফলে টানা বর্ষায় বিভিন্ন ফসলের জমিতে সেই পানি আটকে আছে। কোন কোন জমির ধান একেবারে ডুবে গেছে, আবার কোন জমির ধান সামান্য জেগে আছে। পাটের প্রতিটি জমিতে পানি জমে গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় চাষিরা জানান, যদি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হয় তবে এ মৌসুমে পুরো মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
আলগাগাড়ির মাঠে আবাদ করা চাষি দেলোয়ার রহমান গাজি বলেন, চার বছর আগেও কালভার্টটি সচল ছিল। মঙ্গল মিয়া জীবিত থাকতে কালভার্ট দিয়ে পানি পুকুরের মাধ্যমে সরকারি খাল দিয়ে বের হতো। মঙ্গল মিয়া মারা যাবার পর সালাম ও কালাম কালভার্টটি বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আর পানি বের হয় না। এবার বর্ষায় বৃষ্টি বেশি হচ্ছে ফলে বড় হওয়ার আগেই ডুবে গেছে ফসল।
শরিফ উদ্দিন, আমানুল ও খোরশেদ আলীসহ কয়েকজন চাষি বলেন, এ মাঠে বর্তমানে ধান ও পাটের আবাদ আছে। যদি এক সপ্তাহ পাটের জমিতে পানি জমে থাকে তাহলে পাট পচে যাবে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জমির পাটে গোড়াপচা রোগ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও ধানের জমিতে থোড়ের উপর পানি উঠে গেছে। কিছু কিছু ধান প্রায় ডুবে গেছে। এমন ৮-১০ দিন থাকলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে।
এবিষয়ে আবুল কালাম আজাদ ও তার ভাই কথা বলতে রাজি হননি। তবে পুকুর দেখা শোনাকারী একজন জানান, মঙ্গলমিয়া বেঁচে থাকতে এদিক দিয়ে পানি বের হতো। তার মৃত্যুর পর ছেলেরা এ পুকুর সংস্কার করে মাছ চাষ শুরু করেছে। ফলে কালভার্টটি মাটির নিচে চাপা পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে।
মুজিবনগর ইউএনও পলাশ মন্ডল বলেন, অতিবর্ষণের কারণে ওই মাঠে জলবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বিষয়টি জানতে পেরেছি। সরেজমিন আমাদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিষয়টি দেখবো। কেউ বা কারা যদি পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি বা বাঁধা প্রদান করে থাকে তাহলে সেটি অপসারণ করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষক এবং কৃষির জন্য যা করণীয় উপজেলা প্রশাসন সেটি করবে।
টিএইচ