বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
ঢাকা বুধবার, ২১ মে, ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Post

বরিশালে চার মাসে ডায়রিয়ায় ৩৫ হাজার আক্রান্ত

বরিশাল ব্যুরো

বরিশালে চার মাসে ডায়রিয়ায় ৩৫ হাজার আক্রান্ত

বরিশালে দিন দিন ডায়রিয়া রোগীর ভিড়ের মধ্যে নতুন করে ডেঙ্গুর বিস্তৃতি পরিস্থিতিকে ক্রমশ নাজুক করে তুলছে। বছরের প্রথম ৪ মাসেই বরিশালের সরকারি হাসপাতালেই প্রায় ৩৫ হাজার ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ডিসেম্বরে ডেঙ্গুর বিস্তৃতি আশাতীতভাবে হ্রাস পেলেও এপ্রিলের শুরু থেকে তা আবার বরিশালের ঘরে ঘরে কড়া নাড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিন শুধু সরকারি হাসপাতালেই গড়ে ২৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

ইতোমধ্যে হাসাপাতালে মারা গেছেন ৩জন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই দুই শতাধিক ডেঙ্গু রোগী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতাল সহ এ অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। মের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাটা সাড়ে ৮শ অতিক্রম করেছে।

প্রতিদিনই সরকারি হাসপাতালগুলোতে এডিস মশা আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগে উদ্বেগ বৃদ্ধি করছে। প্রায় ৯ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু ভর্তি সহ ৬৪ জনের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে ২০২৪ শেষ হয়। তবে বিশেষজ্ঞ চিকৎসকদের মতে সরকারি হাসপাতালের বাইরে আরো অন্তত ৩গুন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বার সহ বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

যার কোন পরিসংখ্যান স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে নেই। এদিকে মার্চের মধ্যভাগ থেকে এপ্রিলের মধ্যভাগে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৫শ ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে। এপ্রিলে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় ১০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে।

গত এক সপ্তাহে ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও প্রায় আড়াই হাজার। বছরের প্রথম দুমাসে শীতকালীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হবার পরে মার্চ থেকে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ওপরে উঠে যাওয়ার সঙ্গে হাসপাতাগুলোতে রোগীর সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে।

শুধু মার্চে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতেই প্রায় ১১ হাজার ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। এপ্রিলেও ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪ হাজার। সব মিলিয়ে  বছরের প্রথমদিন থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৩৬ হাজার ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন।

তবে এবছর সরকারি হাসপাতালগুলোতে কোন ডায়রিয়া রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কোন মানুষই দুর্বল মুহূর্ত ছাড়া সরকারি  হাসপাতালে আসেনা। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানের অন্তত ৪গুন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে এমনটা ধরে নেয়া যায়।

চিকিৎসকদের মতে, নগরীর পাশাপাশি এ জেলা জুড়ে পথ খাবারের দোকান ডায়রিয়াসহ সবধরনের পেটের পীড়ার অন্যতম্য প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। যা ক্রমে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি এসব রোগব্যাধি এ অঞ্চলে স্বাস্থ্যঝুঁকি উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি করলেও বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনসহ পৌরসভাগুলোর তেমন কোন হেলদোল নেই।

স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতাল সহ ভান্ডারে ১ হাজার সিসির প্রায় ২৩ হাজার এবং ৫শ সিসির সাড়ে ৬ হাজার আইভি স্যালাইন, চাহিদানুযায়ী মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেটসহ এ্যন্টিবায়োটিক ক্যাপসুলের মজুদ রয়েছে।

টিএইচ