ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি নানা অনিয়মে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উদাসীনতা ও নার্সদের খাম খেয়ালীপনায় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে পর্যন্ত ওষুধ সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের।
এছাড়াও রোগীদের নিম্নমানের খাবার পরিবেশসহ ব্যাপক অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে দুদকের অভিযানে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম।
অভিযান চলাকালীন সময়ে তারা হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন এবং ভর্তি এবং আগত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং অনুসন্ধান চালান।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তা মো. আজমির শরিফ মারজী জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। এ সময় রান্নাঘর, গুদামঘর এবং বহির্বিভাগ ঘুরে দেখা হয়। রোগীদের দেয়া খাবার নিম্নমানের এবং ডায়েট চার্ট অনুযায়ী নয়। এছাড়া হাসপাতালের গুদামে প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুত থাকলেও রোগীদের তা না দিয়ে ডাক্তাররা বাইরের দোকান থেকে সংগ্রহ করতে বলছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার নিয়ম মেনে অফিসে আসেন না। সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন তিনি। তার উদাসীনতায় নিজ খেয়াল খুশি মত করে নার্সরা অফিস করছেন। স্টোররুমে পর্যন্ত ওষুধ মজুদ থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে বলছেন নার্সরা।
তাদের খাম খেয়ালীপনায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। বহির্বিভাগের ওষুধ সরবরাহের রেজিস্ট্রার বহি দুই মাস ধরে হালনাগাদের কোন তথ্য নাই। কর্মরত নার্স ইনচার্জের কাছে অতিরিক্ত ১শটি সরকারি অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন (সেপট্রিয়াক্সোন ইনজেকশন ১ গ্রাম) পাওয়া যায়। এ ছাড়াও হাসপাতালটিতে ৩২ জন ডাক্তারের স্থলে মাত্র ৪ জন কর্মরত আছেন।
তিনি আরও জানান, কিছু রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে থাকায় রোগীদের বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে বেশি খরচে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পত্র পাঠানো হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার সিভিল সার্জন অফিসে মিটিং এ থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
টিএইচ