শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫
ঢাকা শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Post

বৈছাআ রংপুর ও নাটোর জেলার কমিটি স্থগিত

রংপুর প্রতিনিধি

বৈছাআ রংপুর ও নাটোর জেলার কমিটি স্থগিত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। একই বিজ্ঞপ্তিতে নাটোর জেলা কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের কথাও বলা হয়েছে।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর ও নাটোর জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটির নির্ধারিত মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ায় ওই কমিটির সবধরনের কার্যক্রম পরবর্তী নিদের্শ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হলো। এর আগে, গত বছরের ২৪ নভেম্বর ইমরান আহমেদকে আহ্বায়ক ও ডা. আশফাক আহমেদ জামিলকে সদস্য সচিব করে ১৫৫ সদস্যের জেলা কমিটি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

একই দিনে ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতিকে আহ্বায়ক ও রহমত আলীকে সদস্য সচিব করে ১১২ সদস্যের মহানগর কমিটি গঠন করা হয়। এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের পর থেকে বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন মহলের পাশাপাশি খোদ কমিটি থেকে অনেকেই এসব অভিযোগ তুলে পদত্যাগও করেন।

গত ১৮মে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ চার নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে ১৬ জন নেতা পদত্যাগ করেন। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গড়ে ওঠা এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সেই দিন আরও অর্ধশত কর্মী সরে আসার ঘোষণা দেন।

এর আগে, গত ১৫মে দুর্নীতির অভিযোগ এনে জেলা কমিটি থেকে আরেক সদস্য পদত্যাগ করেন। তারও আগে গত ৮ মার্চ সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর কমিটির মুখপাত্রকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে একটি বালু মহালে গিয়ে চাঁদাবাজির চেষ্টার অভিযোগ ওঠে এবং চাঁদাবাজির ঘটনার ভিডিও এবং অডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে তাকে আবার সংগঠনে পুনর্বহাল করা হয়েছে।

এদিকে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের পর ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাসে এই প্লাটফর্মটির সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ লিখেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক হিসেবে আমি যে দায়িত্ব পালন করেছি, তার নির্ধারিত মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় বর্তমান কমিটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।

আমাদের পুরো এই যাত্রা আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভবপর ছিল না। এই সময়ের মধ্যে আমরা যেসব যৌথ উদ্যোগ, সংগ্রাম ও অর্জনের সাক্ষী হয়েছি তা নিঃসন্দেহে রংপুরের ছাত্র-জনতার রাজনীতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকবে। পুরো এই সময়টিতে নানান রকম প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। হয় তো সামনে আরও প্রতিকূলতা আসবে।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি ইমরান আহমেদ, নিজেকে নিবেদিত করেছি এই জেলার মানুষের সেবায়। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে আমি এবং আমরা সম্মিলিতভাবে এই সংগঠনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। আপনারা অনেকেই হয় তো জানেন কিংবা জানেন না আমি একটা ছোটখাটো চাকরিও করি।

যা দিয়ে আমার পড়াশোনা চলতো এবং কিছুটা আমার পরিবারে দিই। নিজের চাকরি, পড়াশোনা  এবং সংগঠন তিন জায়গায় সমানভাবে দায়িত্ব পালন করা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু, এই চ্যালেঞ্জটা আমি অনেক শক্তভাবে গ্রহণ করে বিগত মাসগুলোতে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি।’

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের যুগ্ম সদস্য সচিব মুহম্মদ রাজিমুজ্জামান হূদয় বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা কমিটি স্থগিত করা হয়েছে কেন্দ্র থেকে। হয়তো সংগঠনের প্রয়োজনে রংপুরের জেলা ইউনিটকে নতুন করে কেন্দ্র থেকে সাজানো হবে। আশা থাকবে সমালোচনার ঊর্ধ্বে থেকে নতুন আশার আলো যারা জ্বালাবে যেসব বিপ্লবীরা স্থান পাবে। মহানগর কমিটিও স্থগিত করা উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে।

টিএইচ