শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Post

চার মাসের ছেলে সন্তানকে বিক্রি করে গহনা ও মোবাইল কিনলেন মা

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

চার মাসের ছেলে সন্তানকে বিক্রি করে গহনা ও মোবাইল কিনলেন মা

টাঙ্গাইলের মধুপুরে গহনা ও মোবাইল ফোন কিনতে নিজের চার মাস বয়সী এক ছেলে সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন এক গর্ভধারিণী মা। এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতভর অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে মধুপুর থানা পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে পরিচয়ের পর ২ বছর আগে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরশহরের পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় গোপালপুর উপজেলার বলাটা গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার লিজার সঙ্গে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই রবিউল-লাবনী দম্পত্তির মধ্যে কলহ দেখা দেয়।

এর মধ্যেই গত ৪ মাস আগে তাদের সংসারে জন্ম নেয় তামিম নামে এক পুত্র সন্তান। স্বামীর সঙ্গে কলহের জেরে ৪ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন লাবনী। সন্তার বিক্রির পর সেই টাকায় মোবাইল ফোন, নাকের নথ, নূপুর, ও জুতা কিনেছেন লাবনী আক্তার লিজা।

গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) লাবনীর স্বামী রবিউল ইসলাম মধুপুর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর রাতভর অভিযান চালিয়ে শিশুটি উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করে মধুপুর থানা পুলিশ।

লাবনীর স্বামী রবিউল ইসলাম বলেন, তামিমের জন্মের পর থেকে সংসারে অশান্তি নেমে আসে। অল্প কয়েক দিন আগে লাবনী আমার ছেলে তামিমকে নিয়ে লাবনী তার বোনের বাড়ি ভূঞাপুরে বেড়াতে যায়। কয়েক দিন পর বাড়ি আসতে বললে লাবনী দুর্ব্যবহার করে। আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। তার কয়েক দিন পর আবার ফোন করে বলি তামিমের দাদা অসুস্থ্য। তামিমকে নিয়ে আসো। সে তামিমকে দেখতে চাচ্ছে। লাবনী কথা শোনেনি।

এরপর গত বৃহস্পতিবার জানতে পারি লাবনী আমার ছেলে তামিমকে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে কৌশলে লাবনীকে জিজ্ঞেস করলে সে তামিমকে বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করে। পরে আমি বিষয়টি মধুপুর থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ তামিমকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে ফেরত দেয়।

তামিমের মা লাবনী আক্তার লিজা বলেন, আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি মনির নামের একজনের সহযোগিতায় গত ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করি। ওই টাকা দিয়ে মোবাইল, নূপুর ও নাকের নথ কিনছি। নিজের সন্তানকে বিক্রি করা আমার ভুল হয়েছে। আমি অনুতপ্ত।

বিষয়টি নিয়ে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ  (ওসি) মো. এমরানুল কবীর বলেন, গত বৃহস্পতিবার লাবনী নামের এক নারী তার ৪ মাসের সন্তানকে বিক্রি করেছে বলে আমরা জানতে পারি। পরে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি।

টিএইচ