রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
The Daily Post

ডুমুরিয়ায় প্রধান শিক্ষক সঙ্কটে পাঠদানে বিরুপ প্রভাব

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি

ডুমুরিয়ায় প্রধান শিক্ষক সঙ্কটে পাঠদানে বিরুপ প্রভাব

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ২১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭৮ প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য থাকায় সেই বিদ্যালয়গুলোর পড়া-লেখা ও প্রশাসনিক কাজে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। 

উপজেলা শিক্ষা অফিস, বিভিন্ন বিদ্যালয় ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ২১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ হাজার ২৭০ জন শিক্ষকের মধ্যে ১১৯টি পদ শুন্য। তারমধ্যে ৬২টি বিদ্যালয়ে আন-অফিসিয়ালি ওই বিদ্যালয়ের সিনিয়র একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আর ১৬টি বিদ্যালয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমোদনে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে আছেন। 

 যসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই, সেখানে প্রধানত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। আর প্রধান শিক্ষক না থাকায় ওই বিদ্যালয়ে ১জন শিক্ষক তো এমনিই কমে যাচ্ছেন। তাছাড়া সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে যিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে অফিসের সরকারি খাতাপত্রের কাজে ব্যস্ত থাকছেন, তখন তার পাঠদানও বন্ধ হয়ে পড়ে। 

এছাড়াও বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, বিগত করোনার ২ বছরে স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পড়া-লেখা হয়নি। তাদেরকে অটো প্রমোশন দেয়ায় সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার একটা ঘাটতির কারণে শিক্ষাই এগোচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে শরাফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক আরিফা বেগম বলেন, স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় অন্য স্যারেরা সুষ্ঠুভাবে ৫টা ক্লাস নিতে পারেন না। বাচ্চারা সময়মতো ভালোভাবে ক্লাসগুলো কমপ্লিট করতে না পারায় ভালো সাবজেক্টগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণাই পায় না। 

খর্ণিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিএম ফারুক আহমেদ বলেন, গত মার্চ মাস থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছি। হেড মাস্টার না থাকায় ছেলে-মেয়ের ক্লাসে লেখা-পড়ার হ্যাম্পার (বিঘ্ন) হচ্ছে। 

তাছাড়া খাতাপত্রের কাজ-কর্মও ঠিকমতো হয় না। বিশেষত অন্য সহকারী শিক্ষকরা আর একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে সেভাবে মান্য না করায় স্কুলটা এলোমেলোভাবেই চলছে। বয়ারসিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র সরকার বলেন, শিক্ষকদের কেউ ট্রেনিং-এ যান, আবার হেডের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক অফিসের কাজে যায়। এসব কারণে প্রায়ই ক্লাস কম হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমি নিজেই স্কুলে ক্লাস নিয়ে থাকি।

ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তথা উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি গাজী এজাজ আহমেদ বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। 

খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার অহিদুল আলম বলেন, প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্য ইতোমধ্যে চিঠি তৈরি করে স্বাক্ষরও করেছি। কিন্তু জানতে পারলাম, কতিপয় শিক্ষক আদালতে মামলা করেছে। তাই তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি। 

টিএইচ