জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, “এখন পর্যন্ত ভারতের বাংলাদেশের প্রতি যে আচরণ তা সন্তোষজনক নয়। ভারত যদি এই আচরণ দিয়ে প্রতিবেশীর মর্যাদা দাবি করে, তাহলে সেটা কখনোই অর্জিত হবে না।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার চৌরাঙ্গী মোড়ে এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, “২৪-এর অভ্যুত্থানে যাদের রক্ত ঝরেছে, সেই নির্দেশদাতাদের একজন খুনি শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেবেন, ততদিন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হবে না। যদি সত্যিই প্রতিবেশীর সম্পর্ক গড়তে চায়, তবে চাই পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক। আগের মতো দাসত্বের সম্পর্ক এখন আর কেউ মেনে নেবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিজিবি একটি অকুতোভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। অথচ আওয়ামী লীগ সরকার তাদের যথাযথভাবে ব্যবহারের সুযোগ দেয়নি। বিএসএফের কাছে বিজিবিকে ছোট করে রাখা হয়েছিল। আমরা বিশ্বাস করি, বিজিবির সক্ষমতা রয়েছে বিশ্বের যেকোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার। এই সক্ষমতা শুধু অস্ত্রের নয়, হৃদয়ের শক্তির। ’৭১-এ অস্ত্র ছাড়া স্বাধীনতা অর্জন করেছিল এই জাতি, কারণ তাদের হৃদয়ের শক্তি ছিল।”
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি অন্তবর্তী সরকারকে অনুরোধ করবো—সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র আপস করা যাবে না। যেকোনো ধরনের পুশইন, এজেন্ট প্রবেশ—সবই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এ বিষয়ে সরকার, প্রশাসন ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
বিদ্যুৎ খাত নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, “দেশ বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও প্রকল্পের নামে দুর্নীতির মাধ্যমে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর হাতে টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। আদানি গ্রুপকে সুবিধা দিতে গিয়ে শেখ হাসিনার পরিবার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা কমিশন নিয়েছে। এই দুর্নীতির ফলেই দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে এবং তারা সেখানে বিলাসী জীবন যাপন করছে।”
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, “যদি কেউ সেবা দেওয়ার আগে ঘুষের টাকা চায়, তাহলে তার হাতে থুতু দেওয়া উচিত। ভালো পুলিশকে অবশ্যই সম্মান করা হবে, তবে ঘুষখোরদের কোনো ছাড় নয়। পাটগ্রামে পাথর উত্তোলনের নামে কিছু লোক অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করছে। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে একদিন পাটগ্রাম হঠাৎ করেই ডুবে যাবে।”
পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা বিনা, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ এবং লালমনিরহাট জেলা কমিটির সমন্বয়ক রকিবুল হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
টিএইচ