মাগুরার মহম্মদপুরে মধুমতি নদীর চরঝামা গ্রামের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অসময়ে এ ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে দুটি গোরস্থান, পাঁচটি মসজিদ, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাজারো বসতবাড়ি এবং শত শত একর ফসলি জমি।
গত কয়েক বছর ধরে ভাঙনের ফলে একটি গোরস্থান, শতাধিক বসতবাড়ি, শতাধিক একর ফসলিজমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ বছর বন্যা শুরুর আগেই ভাঙন শুরু হয়ে গেছে। তাহলে জোয়ার আসলে নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে এ অঞ্চলটি বলে ধারণা করছে নদী পাড়ের মানুষ। এ কারণে আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন সবাই।
নদীভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিস্তীর্ণ জনপদসহ অনেক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী। সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, মাগুরা ও ফরিদপুরের সীমান্তবর্তী চরঝামা নদী তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে নদী ভাঙনের কারণে রাস্তা, ফেরিঘাটের কিছু অংশ, গোরস্থান, বিদ্যুতের পিলার এবং শতাধিক বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। চরঝামা গ্রামের উত্তর পার্শের এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা এতই বেশি যে রাত-দিন সমান তালে বাড়িঘর ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদীর তীরবর্তী মানুষ ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সিমান্তবর্তী হওয়ায় কখনও সরকারি সহায়তা তারা পাননি। গত কয়েক বছরে অন্তত এক কিলোমিটারের বেশি জায়গা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। কিন্তু কোন সরকার স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়নি।
চরঝামা গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, গত তিন বছর পূর্বে নদীটি তাদের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছিল। গত বছর হঠাৎ বন্যায় তাদের গাছের বাগানসহ বাড়িঘর নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। একই গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর রহমান মাস্টার (অব.) বলেন, নদী ভাঙনের ফলে চারবার বাড়ি সরাতে হয়েছে। শেষ বয়সে এসে বাড়ি সরানোর সামর্থ্য নেই। সরকারিভাবে যদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয় তাহলে কয়েকদিন পরে ঘরবাড়ি হারিয়ে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুর আক্তার বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টিএইচ