সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫
ঢাকা সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২
The Daily Post

শেবাচিমের অচল ৯৫টি মেশিন অবশেষে সচল

বরিশাল ব্যুরো  

শেবাচিমের অচল ৯৫টি মেশিন অবশেষে সচল

ন্যাশনাল ইলেকট্রো ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) থেকে আসা ৭ সদস্যের কারিগরি টিমের মাধ্যমে হাসপাতালের ৯৫টি অচল মেশিন সচল করালেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর।

গত চার দিন ধরেই কারিগরি টিমের সদস্যরা হাসপাতালের রেডিওলজি এবং ইমেজিং, প্যাথলজি, সিসিইউ, আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, চক্ষু বিভাগ, সাজারি, নাক-কান-গলা বিভাগের বিভিন্ন অকেজো মেশিন মেরামতের কাজ করেন। গত শনিবার কারিগরি টিমের সদস্যরা হাসপাতালে অতি প্রয়োজনীয় ৯৫টি অচল মেশিন সচল করার কাজ শেষ করেন। পর্যায় ক্রমে আরও ১টি এনজিওগ্রাম, সিটি স্ক্যান, এক্সরে, লেসিক, ওসিটি, লিথোরিপটর, এন্ডোসকপিসহ আরও ২০টি মেশিন সচল করার প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হয়েছে।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীরর বিশেষ অনুরোধে গত সপ্তাহে নিমিউ অ্যান্ড টিসি থেকে ৫ সদস্যের কারিগরি টিম হাসপাতালে আসেন।

তারা সব মেশিন সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরবর্তীতে হাসপাতালের নিজস্ব টেকনিশিয়ানের সঙ্গে নিমিউ অ্যান্ড টিসি থেকে আরও দুজন টেকনিশিয়ানকে এনে এই কারিগরি টিমে সংযুক্ত করেন পরিচালক।

কারিগরি টিমের সদস্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী (অপটিক্যাল) হাফিজুর রহমান বলেন, গত চারদিন ধরে নিমিউ অ্যান্ড টিসি থেকে আসা টিম ৬টি অ্যানেস্থেসিয়া মেশিন, ২৫টি সাকশন মেশিন, ১০টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর, ৫টি অটোক্লেভ, ১টি সি-আর্ম মেশিন, ২টি মনিটার, ৮টি ওটি টেবিল, ৫টি ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর, ১০টি হাই ফ্লো নাসাল ক্যানুলা, ৫টি আইসিইউ বেড, ৬টি ওটি লাইট, ৫টি ডেন্টাল ইউনিট, ২টি ডায়াথার্মি মেশিন, ৪ ইসিজি মেশিন ও ১টি এক্সরে মেশিন সহ ৯৫টি মেশিন মেরামত শেষে সচল করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের ১টি করে ইকো, কার্ডিয়াক ডিফাইব্রিলেটর, কার্ডিয়াক মনিটার, ইসিজি ক্যাথল্যাব (এনজিওগ্রাম), সিটি স্ক্যান, চোখের লেসিক, চোখের ফ্যাকো, অপটিক্যাল কোহেরেন্স টমোগ্রাফি (ওসিটি),  ইউরোলজি লিথোরিপটর, আরও ১টি সি-আরম, ২টি করে এক্সরে, এন্ডোসকপি মেশিন মেরামত শেষে চালু করা হবে।

এই মেশিনগুলোর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমাদের দেশে না থাকায় বিদেশ থেকে সরবরাহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেজন্য সময় দিতে হবে। দক্ষ টেকনোলজিস্ট কিংবা জনবলের অভাবে দীর্ঘ দিন মেশিন গুলো বন্ধ থাকায় এই সমস্যার সৃস্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ন্যাশনাল ইলেকট্রো ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) থেকে আসা কারিগরি টিমে বাকী ৬ সদস্যরা হলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) শুভদেব সরকার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রনিক্স) অপু সরকার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আরএসি) মো. মাহাবুব হোসেন, টেকনিশিয়ান (ইলেকট্রনিক্স) মো. তৌহিদুর জামান, টেকনিশিয়ান আওলাদ হাসান ও টেকনিশিয়ান কাউছার হোসেন।

হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট মিথুন রায় বলেন, হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রসহ রেডিওলজি এবং ইমেজিং, প্যাথলজি, সিসিইউ, আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, চক্ষু বিভাগ, সাজারি ও নাক-কান-গলা বিভাগের প্রায় শতাধিক মেশিন সচল করা হয়েছে। মেশিন গুলো রোগীরা যেমনি সেবা পাচ্ছেন, তেমনি আমরাও সেবা দিতে পারছি।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের অনেক মেশিন অকেজো অবস্থায় ছিল। সেগুলো মেরামত করে সচল করা হয়েছে।

গত শনিবার নিমিউ অ্যান্ড টিসি থেকে আসা ৭ সদস্যের কারিগরি টিম টিম জরুরি ভিত্তিতে ৯৫টি অকেজো মেশিন সচল করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা মেশিনগুলো রোগীর সেবায় কাজে লাগাচ্ছি। বাকী মেশিনগুলো সচল করতে যন্ত্রাংশ আমদানি করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর জন্য সময়ের প্রয়োজন।

এছাড়া রোগী সেবার মান বৃদ্ধির জন্য আমরা আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মধ্যে  ১টি এমআরআই মেশিন, ক্যাথ ল্যাব ও সি-আম মেশিন পেতে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের সফলতার কথা কেউই বলে না। আর সেবা জোর করে হয় না, ভালোবাসা দিয়ে নিতে হয়। সমস্যা হলে ধৈর্য্য ধরতে হয়।

মানুষকে বুঝতে হবে হাসপাতালে রোগী সেবার জন্য যে পরিমাণে জনবল প্রয়োজন তা আমাদের নেই। তাই সবাইকে এব্যাপারে যেমনি সবাইকে সচেতন হতে হবে, তেমনি আমাদের সহযোগিতা করতে হবে।

টিএইচ